‘পাথর’ শ্রেয়স গললেন প্রীতির আলিঙ্গনে

ক্যাপ্টেন শ্রেয়স আইয়ার। এক্সপ্রেশন খুবই কম দেখা যায়। ঠিক যেন নতুন ক্যাপ্টেন কুল। আইপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে যেন পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। বোর্ডে ২০৪ রানের টার্গেট। যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, নিশ্চয়তা ছিল না ম্যাচ জেতা যাবে কি না। তার উপর প্রথম কোয়ালিফায়ারে মাত্র ১০১ রানে অলআউট হয়ে যাওয়া। সেই চাপ তো ছিলই। ঠান্ডা মাথায় একটি ইনিংস খেলেন। যে ইনিংসের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। বল গ্যালারিতে উড়ছিল, শ্রেয়স আইয়ারের অভিব্যক্তিতে কোনও বদল নেই। ম্যাচটা জেতালেন ছয় মেরে। তাতেও কোনও উচ্ছ্বাস নেই। পাথর হয়ে গেলেন নাকি!

পরিস্থিতি দেখে তাই মনে হচ্ছিল। পঞ্জাব কিংসের ডাগআউটে সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শ্রেয়সের ভাবভঙ্গি সেই এক। পঞ্জাব কিংসের বাকি প্লেয়াররা ক্যাপ্টেনের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন, আলিঙ্গন করছেন। অন্যতম কর্ণধার নেস ওয়াদিয়া শ্রেয়সকে শুভেচ্ছা জানালেন। শ্রেয়স যেন এই জগতের বাইরে। কী ভাবছিলেন, কে জানে। প্রীতি জিন্টা আলিঙ্গন করতে প্রথম বার শ্রেয়সের মুখে সামান্য হাসি দেখা গেল। আর দ্বিতীয় বার রোহিতের সঙ্গে হাত মেলানোর সময়।

মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া হতাশায় বসে পড়েছেন। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টায় দেখা গেল শ্রেয়সের সতীর্থ মার্কাস স্টইনিসকে। কিছুটা ধাতস্ত হতেই সৌজন্য বিনিময় করলেন শ্রেয়সও। ম্যাচ শেষে কার্যত প্রতিটা পুরস্কারই তাঁর ঝুলিতে। এর বাইরেও নানা মুহূর্ত ছিল। পরিবারের লোকজনও হাজির। শ্রেয়সের বোনও উপস্থিত ছিলেন। সকলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর শ্রেয়স যেন হুশে ফিরলেন।

ম্যাচের সঞ্চালক হর্ষ ভোগলে তাঁকে জিজ্ঞেসই করে বসলেন, তোমাকে দেখে মনে হচ্ছিল, পুরোপুরি অন্য জগতে বিচরণ করছিলে। কোনও তাপ উত্তাপ নেই। হাসি নেই মুখে। শ্রেয়সের মন্তব্যে উঠে এল সেই প্রসঙ্গই। পঞ্জাব ক্যাপ্টেন খোলসা করেন, ‘এই ধরনের বড় মঞ্চই তো পছন্দ করি। সব সময় নিজেকে এবং সতীর্থদেরও বলি, যত ঠান্ডা থাকতে পারবে, সেরা রেজাল্ট পাবে। আমিও সেটাই চেষ্টা করেছি। অযথা কোনও উত্তেজনা না দেখিয়ে ঠান্ডা থাকার চেষ্টা করে গিয়েছি।’

সব মিলিয়ে মাত্র দ্বিতীয় বার এবং দীর্ঘ ১১ বছর পর আইপিএল ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে পঞ্জাব কিংস। সেলিব্রেশন কি শুরু? শ্রেয়স পরিষ্কার করে দিলেন, অর্ধেক কাজ হয়েছে, অর্ধেকটা বাকি। ট্রফি জিতেই যে আসল সেলিব্রেশনটা করতে চান, তাঁর কথায় পরিষ্কার। আর সেটা করতে পারলে, নতুন ইতিহাস লিখবেন। আইপিএলে কোনও ক্রিকেটার দুটি ভিন্ন দলকে ক্যাপ্টেন হিসেবে ট্রফি জেতাতে পারেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × two =