ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে মাত্র একবার ফাইনালে উঠেছিল পঞ্জাব কিংস। সেই ২০১৪ সালে। কিন্তু রানার্স হয়েই থাকতে হয়েছিল। এরপর থেকে শুধুই অপেক্ষা। আর কোনওদিন ফাইনাল দূর অস্ত, প্লে-অফেই উঠতে পারছিল না। শ্রেয়স আইয়ারের নেতৃত্বে এ বার দীর্ঘ ১১ বছর পর প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছিল পঞ্জাব কিংস। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এ বার নতুন চ্যাম্পিয়ন পাওয়া যাবে। প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। মুম্বইকে হারিয়ে আরসিবির সামনে পঞ্জাব। দু-দলই প্রথম ট্রফির খোঁজে। মঙ্গলবার রাতে নতুন চ্যাম্পিয়ন পাবে আইপিএল।
পঞ্জাব এবং মুম্বই ম্যাচের আগে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বৃষ্টি। অপেক্ষা বাড়ে। প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী পুরো ওভার ম্যাচের জন্য অন্তত ৯.৩০ অবধি অপেক্ষা করাই যেত। বারবার বৃষ্টি আসা-যাওয়া। অবশেষে পৌনে দশটায় শুরু হয় ম্যাচ। এরপরও বৃষ্টি, তবে সেটা চার-ছয়ের। প্রকৃতি আর বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে পয়া নয়। কিন্তু বোর্ডে ২০০ প্লাস রান তোলার পর আত্মবিশ্বাসী ছিল মুম্বই শিবিরও। এর অন্যতম কারণ জসপ্রীত বুমরার মতো বোলার তাঁর টিমে রয়েছেন। যিনি যে কোনও সময় ম্যাচের রং বদলে দিতে পারেন। শুধু তাই নয়, পরিসংখ্যান আরও বলছে ২০০ প্লাস রান করে কোনও দিন হারেনি মুম্বই। এ দিন কোনও কিছুই কাজে দিল না। শ্রেয়স আইয়ার যেন এমনই একটা মিশন ইমপসিবলে নেমেছিলেন।
টস জিতেছিলেন। রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শ্রেয়স নিজেই। বোর্ডে ২০৪ রানের টার্গেট। প্রভসিমরন সিংকে দ্রুতই হারায় পঞ্জাব কিংস। কিন্তু জশ ইংলিশ ক্রিজে আসতেই আরও একবার জোশ ফিরে পায় পঞ্জাব কিংস। প্রিয়াংশ আর্যর সঙ্গে দুর্দান্ত একটা পার্টনারশিপ। তবে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায় শ্রেয়স এবং নেহালের পার্টনারশিপ। ব্যক্তিগত ১৩ রানে নেহালের ক্যাচ ফসকেছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। আইপিএলের ইতিহাসে অন্যতম সেরা একটা রান তাড়ার কীর্তি দেখলেন ক্রিকেট প্রেমীরা।
ফাইনালে যাওয়ার চাপ, কোয়ালিফায়ারের ম্যাচ, বোর্ডে কত বড় টার্গেট। শ্রেয়স আইয়ারকে দেখে কিছু মনে হয়নি। যে দলেরই সমর্থক হোন, শ্রেয়স আইয়ারের এমন ইনিংসের প্রেমে পড়তে বাধ্য। ক্যাপ্টেন্স নক। ক্লিন হিট। নিখুঁত প্ল্যানিং, টাইমিং। কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয় শ্রেয়সের ইনিংসের জন্য। ৪১ বলে ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন শ্রেয়স। ৫টি বাউন্ডারি, ৮টি ওভার বাউন্ডারি। ২১২-র উপর স্ট্রাইক রেট। ম্যাচের সেরার পুরস্কার। শ্রেয়সের ইনিংসকে কোনও ভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় না।