রামপুরহাট কাণ্ডের তদন্তে ‘সিট’ গঠন, ক্লোজ করা হয়েছে ওসিকে, অপসারিত এসডিপিও

কলকাতা: রামপুরহাটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের। মর্মান্তিক ‘হত্যাকাণ্ডে’র তদন্তে সিট গঠন করল রাজ্য। এই স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিমের মাথায় রয়েছেন এডিজি সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংহ। রয়েছেন ডিআইজি সিআইডি (অপারেশন) মিরাজ খালিদ ও আইডি ভরতলাল মিনা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ক্লোজ করা হয়েছে রামপুরহাটের আইসিকে। অপসারণ করা হয়েছে এসডিপিও সায়ন আহমেদকে। রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর কাছে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রির্পোট চেয়েছেন।
ডিজি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘উপপ্রধান যে গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন, সেই গ্রামের ৭-৮টা বাড়িতে আগুন ধরে গিয়েছে। গতকাল রাতে ওখানে পুলিশ পৌঁছে যায়। দমকল পৌঁছে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় ২-৩ জন আহত দেখা গিয়েছিল। তাঁদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজকে দমকল কর্মীরা যখন একটা বাড়ির ভিতরে ঢোকেন, সেখান থেকে ৭ টা দেহ পাওয়া গিয়েছিল। এটা কীভাবে হয়েছে, দেখছি। মানুষ উত্তেজিত হয়ে করেছে নাকি অন্য কোনও ভাবে, তা দেখা হচ্ছে। ওখানকার এসডিপিও ও আইসিকে ওখান থেকে সরিয়ে দিয়েছি।’
ডিজি মনোজ মালব্য জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছে। যার নেতৃত্বের রয়েছেন এডিজি সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংহ। প্রয়োজনে আরও উচ্চ পদস্থ কর্তাকে এই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত করা হতে পারে। কীভাবে ঘটনাটা ঘটল, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন ডিজি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। গ্রামে যাতে আর কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না ঘটে, তার জন্য পুলিশ পিকেট রয়েছে । যে ঘটনাটা ঘটছে, সেটা উপপ্রধানের খুনের এক ঘণ্টার মধ্যেই ঘটেছে। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই এলাকার বাসিন্দা। সঞ্জু শেখের বাড়িতে আগুন লেগেছে। তাঁর বাড়ির সদস্যদেরই মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি বাড়িতে আগুন লেগেছে।’
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের পাশ থেকে উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুনের অভিযোগ ওঠে। তারপরই সোমবার রাতভর এলাকায় চলে তাণ্ডব। রামপুরহাটের বগটুইয়ে ১০ জনের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয় সকালে। সোমবার রাতেই তিনটি দেহ উদ্ধার হয় বলে খবর। বাকি সাতটি উদ্ধার হয় মঙ্গলবার। তবে ডিজির কথা অনুযায়ী, সোমবার রাতে তিন জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুড়িয়ে মারা হয়েছে প্রত্যেককেই। ওই এলাকার একাধিক বাড়ি পুড়ে খাক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − sixteen =