কলকাতা : রাজ্য রাজনীতিতে সভাপতির পদে পদোন্নতির পর এটাই তাঁর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম বড় রাজনৈতিক মঞ্চ। বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এবার প্রধানমন্ত্রীর সফরে তাঁর পাশে মঞ্চ ভাগ করবেন বলে দলের অন্দরমহলে প্রবল জল্পনা। একাংশের মতে, এই মঞ্চ ভাগাভাগি শুধু সাংগঠনিক মর্যাদার স্বীকৃতি নয়, বরং বাংলায় শমীকের নেতৃত্বে বিজেপির ভবিষ্যৎ কৌশলের প্রারম্ভিক ইঙ্গিত।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্ভাব্যভাবে ১৮ জুলাই (শুক্রবার) পশ্চিমবঙ্গে আসতে পারেন। সম্ভাব্য জনসভার স্থান হিসেবে আলোচনায় রয়েছে দমদম বিমানবন্দরের সংলগ্ন একটি বড় মাঠ, যদিও বারাসত-সহ আরও কিছু বিকল্প স্থান প্রশাসনিক স্তরে বিবেচনায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যেই কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখেছে। সভা শেষেই প্রধানমন্ত্রীর সড়কপথে বিহার যাত্রার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলেও প্রশাসনিক সূত্রে ইঙ্গিত।
সফরের দিন ও স্থান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা না হলেও, বিজেপি নেতৃত্বের তৎপরতা ও প্রস্তুতি জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই সভায় উপস্থিত থাকতে পারেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা। তবে সবচেয়ে বেশি নজর থাকবে রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের দিকে। দিল্লির উচ্চনেতৃত্বের পাশে প্রথমবার তাঁকে মঞ্চে দেখতে পাওয়া গেলে, তা শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থার প্রকাশ বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।
এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার মন্তব্য, “এই মঞ্চ ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ নিজেই একটি বার্তা—নেতৃত্বে পরিবর্তনের পর নতুন সভাপতির সাংগঠনিক গ্রহণযোগ্যতা ও রাজনৈতিক ভারসাম্যের স্বীকৃতি দিচ্ছে কেন্দ্র।” অন্য এক নেতা বলেন, “জনসভাটি নিছক প্রচার নয়। এটা রাজ্যের রাজনৈতিক অভিমুখ বদলানোর সূচনা হতে পারে। বাংলা ও বিহারকে একসাথে কৌশলগত দৃষ্টিতে ধরতেই এই মঞ্চায়ন।”
প্রসঙ্গত, সম্ভাব্য সভাস্থলকে ঘিরে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির নিয়মিত সমন্বয় চলছে। ড্রোন নজরদারি, তিনস্তরের নিরাপত্তা বলয় এবং গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণ ইতিমধ্যেই চালু রয়েছে।
এখনও পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে কোনও চূড়ান্ত কর্মসূচি প্রকাশ করা হয়নি। তবে দলের অন্দরমহলে বিশ্বাস, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সরকারি ঘোষণা হয়ে যাবে। তার আগেই রাজনীতির আলোচনায় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই সম্ভাব্য সফর—যা একদিকে বিজেপির পূর্বাঞ্চল কৌশলের সূচনা, অন্যদিকে শমীক ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে চলেছে।