ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সমতায় ফিরল ভারত

ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ নীতির মোক্ষম জবাব দিল টিম ইন্ডিয়া। ৩৯৯ রান তাড়া করতে গিয়ে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের ছেলেরা আগ্রাসী মেজাজে শুরু করলেও, ১০৬ রানে জিতে শেষ হাসি হাসলেন রোহিত শর্মা। যশস্বী জসওয়ালের ২০৯ রানের পর, প্রথম ইনিংসে জশপ্রীত বুমরাহ ব্রিটিশদের ব্যাটিংকে একাই বুঝে নিয়েছিলেন। আর এবার দ্বিতীয় ইনিংসে সাহেবদের গর্ব ও দর্প চূর্ণ করে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন । নিলেন ৬৬ রানে ৩ উইকেট। ফলে ভারতের প্রথম বোলার হিসেবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সবচেয়ে উইকেট নেওয়ার নজির গড়লেন অভিজ্ঞ অফ স্পিনার।

তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন অন্য দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব এবং অক্ষর প্যাটেল । ফলে চতুর্থ দিনেই বেন স্টোকসদের দ্বিতীয় ইনিংসকে ২৯২ রানে শেষ করে দিয়ে ভারত দাপুটে জয় পেল। একইসঙ্গে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে সমতা ফেরাল রাহুল দ্রাবিড়ের ছাত্ররা। অবশ্য এই জয়ের নেপথ্যে শুভমান গিলের সেঞ্চুরিকেও ভুলে গেলে চলবে না। কারণ তাঁর ১০৪ রানের জন্যই বড় রানের লিড পেয়েছিল ভারত।

বিরাট কোহলি সিরিজের বাকি তিন টেস্টে ফিরবেন কিনা কোনও গ্যারান্টি নেই। রবীন্দ্র জাদেজাকেও সম্ভবত বাকি তিন টেস্টে পাওয়া যাবে না। কারণ তারকা অলরাউন্ডার এনসিএ-তে রিহ্যাব করতে ব্যস্ত। শোনা যাচ্ছে কেএল রাহুল তৃতীয় টেস্টের দলে ফিরতে পারেন। তবে মহম্মদ শামিও খেলতে পারবেন না। কারণ ইংল্যান্ডে অস্ত্রোপচার করাতে যাবেন তারকা পেসার। এমন প্রেক্ষাপটে ইংল্যান্ডকে পালটা জবাব দিয়ে ভারতের এই টেস্ট জয় ড্রেসিংরুমকে স্বস্তি এনে দেবে।

চতুর্থদিনের খেলা শুরু করেন জ্যাক ক্রলি ও রেহান আহমেদ। দুজন দ্রুত রান তুলছিলেন। বিপক্ষের ওপেনারদের আউট করতে এক দিক থেকে বুমরাহ ও অন্য দিকে অক্ষরকে বল দেন রোহিত। ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কা দেন অক্ষর। ২৩ রান করে আউট হন রেহান। অক্ষরকে সঙ্গ দেয় ভাগ্য। রেহানের বলটি নিচু হয়ে যাওয়ায় ব্যাটে লাগাতে পারেননি তিনি।

জো রুটও প্রথম বল থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন। রিভার্স সুইপ খেলে শুরু করেন। পর পর দুই উইকেট পড়লেও রান তোলার গতি কমায়নি ইংল্যান্ড। ১০ বলে ১৬ রান করে অশ্বিনকে অহেতুক বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন রুট। ইংল্যান্ডের ইনিংস এক দিকে ধরেছিলেন ক্রলি। অর্ধশতরান করে খেলছিলেন তিনি। কিন্তু লাঞ্চের বিরতির কিছুক্ষণ আগে জোড়া বড় ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ৭৩ রানে ব্যাট করা ক্রলিকে ফেরান কুলদীপ। আম্পায়ার প্রথমে আউট দেননি। রিভিউ নিয়ে সফল হন রোহিত। এর পর বুমরাহর ইন সুইং ডেলিভারির লাইন মিস করে ব্যক্তিজ্ঞত ২৬ রানের এলবিডব্লিউ হন জনি বেয়ারস্টো। ১৯৪ রানে ৬ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

২২০ রানে ৭ উইকেট চলে যেতে ইংল্যান্ডের হার ছিল সময়ের অপেক্ষা। বেন ফোকস ও টম হার্টলি লড়াই করে অষ্টম উইকেটে ৫৫ রান যোগ করলেও, ম্যাচ জয়ের জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না। ফোকসকে কট অ্যান্ড বোল্ড আউট করেন বুমরাহ। এর পর বাকি দুই উইকেট চলে যাওয়া ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। ফলে দাপটের সঙ্গে জিতে সমতা ফেরালেন রোহিত ও তাঁর সতীর্থরা। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজকোটে শুরু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − three =