গুজরাট টাইটান্স বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচের আগে তাঁকে কেউ চিনতেন না। কিন্তু আইপিএলের প্রথম ম্যাচে নেমেই তিনি সুপারহিট। আইপিএল-অভিষেকেই রেকর্ড গড়ে ফেললেন। তাঁর অধিনায়কের কাছ থেকে পেয়ে গেলেন নাম, ‘ছোট্ট এবি’। যদিও এত কিছুর পরে সর্বাঙ্গীন সুন্দর হল না। তাঁর দল লখনউ সুপার জায়ান্টস হেরেই গেল শেষমেশ। তাঁর লড়াই পেল না পোয়েটিক জাস্টিস। কিন্তু প্রথম দর্শনেই সবার নজর কেড়ে নিলেন অখ্যাত অনামী আয়ুশ বাদোনি। এটাই তো আইপিএলের কৃতিত্ব। নিমেষেই অখ্যাত, অনামী কেউ বিখ্যাত হয়ে যেতে পারেন। এক লহমাতেই নজর কেড়ে নিতে পারেন। আয়ুশ বাদোনিই যেমন।
সোমবারের ম্যাচের আগে তাঁর কথা কেউ সেভাবে শোনেনি। টি-টোয়েন্টির অভিজ্ঞতা ছিল না বললেই চলে। সোমবারের ম্যাচ দিয়ে আইপিএলে অভিযেক ঘটে আয়ুশের। তার আগে মাত্র আট রান করেছিলেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। লিস্ট এ বা প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাও ছিল না। যদিও অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতের হয়ে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে ২০০ রান করেছিলেন আয়ুশ। শ্রীলঙ্কা যুব দলের বিরুদ্ধে টেস্টে খেলেছিলেন ১৮৫ রানের ইনিংস। কিন্তু দিল্লির হয়ে ঘরোয়া টুর্নামেন্টে কখনওই জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি আয়ুশকে।
ঋষভ পন্থের কোচ তারক সিনহার ছাত্র তিনি। আয়ুশের কথা আলাদা করে রাহুল দ্রাবিড় বলেছিলেন অতুল ওয়াসনকে। রসিকতা করে দ্রাবিড় বলেছিলেন, ”আমি যে প্রতিভাদের চিহ্নিত করি, তাদের প্রতি তোমরা নজর দাও না।” সেই সময়ে জুনিয়র দলের কোচ ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। তিনি অতুল ওয়াসনকে তিন জন নতুন প্রতিভার কথা বলেছিলেন। এই তিনজনের মধ্যে ছিলেন আয়ুশ। দ্রাবিড়ের কথাকে গুরুত্ব দেন ওয়াসন। পরে ডিডিসিএ-র একটি মিটিংয়ে ওয়াসন বলেন, এবার থেকে আয়ুশের দিকে নজর দেওয়া হবে।
এহেন আয়ুশের উপরে ভরসা রেখেছিল লখনউ টিম ম্যানেজমেন্ট। নিলামে ২০ লাখ টাকা দিয়ে তাঁকে কিনেছিল। আযুশও তা ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁর দলকে। লখনউ যে তাঁর উপরে আস্থা রেখেছিল, তার প্রতিদান দিয়েছে ব্যাট করতে নেমে। মাত্র ৪১ বলে ৫৪ রান করেন আয়ুশ। চারটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান। আয়ুশের উলটো দিকে ছিলেন রশিদ খান, লকি ফার্গুসনের মতো বোলার। মহম্মদ সামি আগুন জ্বালাচ্ছিলেন। তবুও কিন্তু আয়ুশ নিজের ছাপ রেখে যান। চার উইকেট হারিয়ে লখনউ যখন ধুঁকছে, তখন দীপক হুডার সঙ্গে দলের হাল ধরেন নবাগত আয়ুশ। তাঁর ও দীপক হুডার দাপটে লখনউ তোলে ৬ উইকেটে ১৫৮ রান। ব্যাট করতে নেমে ২ বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় গুজরাট টাইটান্স।
আয়ুশের প্রশংসা করে অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলেন, ”ও আমাদের বেবি এবি। প্রথম দিন থেকেই দারুণ ছন্দে রয়েছে। এত অল্প বয়সে শরীর ৩৬০ ডিগ্রি মুচড়ে শট খেলতে পারে। সুযোগ পেয়ে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে। এতে আমি বেশ খুশি। চার উইকেট হারানোর পরে ব্যাট করতে নেমেছিল আয়ুশ। খুব সহজ পরিস্থিতি ছিল না। চাপের মুখে বেশ ভাল খেলেছে। আগামিদিনে আরও ভাল খেলবে বলেই আশা রাখি।”