বার্মিংহ্যামে প্রদীপ জ্বালছেন বাংলার আকাশদীপ। বেন ডাকেটকে (২৫) বোল্ড করলেন। আর স্বপ্নের ডেলিভারিতে জো রুটের (৬) উইকেট উড়িয়ে দিলেন। জশপ্রীত বুমরাহর অভাব বুঝতেই দিচ্ছেন না বাংলার পেসার ও মহম্মদ সিরাজ।
হায়দরাবাদি সিরাজও আগুন জ্বালাচ্ছেন। জাক ক্রলি (০) তাঁর শিকার। চতুর্থ দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ৭২। এখনও ৫৩৬ রানে পিছিয়ে তারা।
ভারতের পাহাড়প্রমাণ রানের চাপে কি শেষমেশ পিষ্ট হবে ইংল্যান্ড? রবিবার বড় পরীক্ষা ভারতীয় বোলারদের। তিন উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডের উপরে চাপ তৈরি করেছে ভারত। এই চাপটা ধরে রাখতে হবে পঞ্চম দিনের শেষ বল পর্যন্ত। আকাশদীপ ও সিরাজই কিন্তু প্রত্যাশার ফানুস ওড়াচ্ছেন বার্মিহ্যামে।
গিল মহাকাব্য শেষমেশ থামল ১৬১ রানে। ৪২৭ রানে ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা টিম ইন্ডিয়ার, ইংল্যান্ডের টার্গেট বিশাল ৬০৮ রান। আর সেই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে ইংল্যান্ড। শেষ বেলায় ভারতীয় বোলারদের দাপটের দিন নায়ক একজনই। তিনি ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল।
একাধিক রেকর্ড গড়লেন তিনি। সবার মনে যখন একটাই প্রশ্ন, কখন ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করবে ভারত, ঠিক সেই সময়েই গিল ডেকে নিলেন তাঁর সেনানীদের। হেডিংলি টেস্টে শেষ দিনে করতে হতো সাড়ে তিনশো রান। সেই রান তুলে নিয়ে টেস্ট জিতে যায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় টেস্টের পরিণতি যাতে সেদিকে না যায়, সেই কারণে রানের পাহাড় গড়ল ভারত। ইনিংস ডিক্লেয়ার করতেও সময় নিলেন গিল। ইংল্যান্ডের হাতে দিলেন কম সময়। সেই সঙ্গে রানের পরিমাণও দিলেন বহু বাড়িয়ে।
চলতি সিরিজে গিল সেই ‘মিডাস রাজা’র কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। যা ধরছেন তাতেই সোনা ফলাচ্ছেন। হেডিংলি টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। এজবাস্টনেও গিলের ব্যাটে রানের ফল্গুধারা।
প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ২৬৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে গিল ফের শতরান করলেন। একই টেস্ট ম্যাচে ডাবল হান্ড্রেড ও হান্ড্রেড করেছেন অনেকেই। এই তালিকায় রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডুগ ওয়াল্টার্স, সুনীল গাভাসকর, লরেন্স রো, গ্রেগ চ্যাপেল, গ্রাহাম গুচ, ব্রায়ান লারা, কুমার সঙ্গকারা, মারনাস লাবুশেনের মতো তারকারা।
সেই তালিকায় নবতম সংযোজন ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল। একাধিক নজির গড়লেন ভারতের তরুণ অধিনায়ক। সম্প্রচারকারী চ্যানেলে বলা হচ্ছিল শুভমান যুগ শুরু হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটে। এই সফরের আগেও গোটা দেশ তাঁকে বিদেশ সফরে পয়েন্ট দিত না। ইংল্যান্ড সফর এক ঝটকায় বদলে দিল শুভমান গিলকে।
১৬২ বলে দুরন্ত ১৬১ রানের ইনিংস খেললেন ভারত অধিনায়ক। প্রথম ইনিংসে তিনশো রান মাঠে ফেলে এসেছিলেন বলে যোগরাজ সিংয়ের মতো প্রাক্তন ক্রিকেটার বলেছিলেন, ক্রাইম করেছে। এদিন গিল শাসন করলেন ইংল্যান্ডের বোলারদের। থামতেই চাইছিল না তাঁর ব্যাট। তাঁর সঙ্গী রবীন্দ্র জাদেজাও (৬৯) যোগ্য সঙ্গত করেন তাঁকে। ঋষভ পন্থও চটজলদি ৬৫ রান করে যান। কিন্তু এদিন সবাই ব্যাকসিটে। সামনের সারিতে শুধু একজনই। তিনি শুভমান গিল।