মণিপুরে ফের হিংসা, ইমফলে আহত বহু, বিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা

ইমফল : মাস-কয়েক বিরতির পর ফের সহিংস হয়ে উঠেছে মণিপুর। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানী ইমফলে সংগঠিত সহিংসতায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের পাঁচটি উপত্যকা জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে সরকার।

ঘটনার সূত্রপাত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মেইতেই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ জনৈক নেতা আরামবাই টেংগোলকে গ্ৰেফতারের পর। আরামবাই টেংগোলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে এক খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে গতকাল রাতে শয়ে শয়ে মেইতেই সমাজের মানুষ প্রকাশ্য রাস্তায় বের হয়ে সহিংস হয়ে ওঠেন। গোটা ইমফল শহর জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ, ভাঙচুর শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

গভীর রাত পৰ্যন্ত ইমফল পশ্চিমের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে কোয়াকেইথেল ও উরিপোকে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে টায়ার এবং অব্যবহৃত আসবাবপত্র পুড়িয়ে মূল রাস্তা অবরোধ করেন। ক্রমবর্ধমান উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়েছে। বিক্ষোভের ফলে শহরের কিছু এলাকা স্থবির হয়ে পড়ে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে।

‘আমরা সাধারণ নাগরিক, সন্ত্রাসী নই’, ‘আমাদের নেতাকে মুক্তি দিতে হবে, নইলে আমাদের সকলকে গ্রেফতার করো’ প্রভৃতি স্লোগান দিয়ে তাঁদের নেতা আরামবাই টেংগোলকে অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।

এরই মধ্যে কতিপয় বিক্ষোভকারী কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের বিরুদ্ধে চরম অবাধ্যতা প্রদর্শন করে আত্মদহনের চেষ্টা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং সোশাল মিডিয়ায় গুজব ও উস্কানিমূলক বিষয়বস্তুর বিস্তার রোধ করতে রাজ্যের পাঁচটি উপত্যকা জেলা যথাক্রমে ইমফল পশ্চিম, ইমফল পূর্ব, থউবাল, বিষ্ণুপুর এবং কাকচিঙে ভিএসএটি এবং ভিপিএন সংযোগ সহ ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর আজ রবিবার ভোররাতে রাজ্যের কমিশনার-সচিব (গৃহ) এন অশোক কুমার এক বিবৃতি জারি করেছেন। জারিকৃত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারনেট বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ অসামাজিক কৰ্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনসাধারণের আবেগকে উস্কে দিতে নানা ধরনের ছবি, ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং ঘৃণামূলক ভিডিও বার্তা প্রেরণের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হতে পারে। যার ফলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 5 =