প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে ফের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে চিঠি দিয়েছে। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উপসচিবের পাঠানো ওই চিঠিতে গ্রামীণ আবাস যোজনা প্রকল্পের জেলাভিত্তিক কয়েকটি অসঙ্গতির কথা তুলে ধরে রাজ্য সরকারকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ বা অ্যাকশন রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। রাজ্যে আবাস প্রকল্পের কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি গত মার্চ মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই চিঠি বলে জানানো হয়েছে। চিঠিতে রাজ্যের তিন জেলা, কালিম্পং, নদিয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আবাস যোজনার কাজে বেশ কিছু অসঙ্গতির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠছে, আবেদনকারীদের অনেকের ক্ষেত্রে ঠিকঠাক ভেরিফিকেশন না করেই আবেদন মঞ্জুর করে দেওয়া হয়েছে।
নদিয়া জেলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অভিযোগ, ২০১৮ সালের আবাস প্লাস প্রকল্পের জন্য সার্ভে ঠিকঠাক করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর সুবিধা পাওয়ার জন্য যে মাপকাঠির কথা বলা ছিল, তা ঠিকঠাক মানা হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকী, যে ব্যক্তির মোটর সাইকেল রয়েছে, তাঁরও নাম উপভোক্তার তালিকায় উঠে এসেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার প্রকল্পের নামও বদলে ফেলা হয়েছে বলে দাবি।
কালিম্পংএ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর লোগো সব জায়গায় ব্যবহার করা হয়নি বলে অভিযোগ কেন্দ্রের। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যখন পরিদর্শনে এসেছিল, তখন সাতটি বাড়ির মধ্যে চারটিতে প্রকল্পের লোগো ব্যবহার করা হয়েছিল। বাকি তিনটির মধ্যে দু’টিতে কোনও লোগো ছিল না এবং একটিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহর)-এর লোগো ছাপানো ছিল বলে জানাচ্ছে কেন্দ্র।
আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় আধা-পাকা বাড়িতে থেকে এক ব্যক্তির নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)-এর তালিকায় উঠে এসেছে বলে অভিযোগ কেন্দ্রের। এবিষয়ে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের রিপোর্ট পাঠাতে হবে মন্ত্রকে। তবে মঙ্গলবারই কেন্দ্রের ওই চিঠির জবাব দেওয়া হবে বলে পঞ্চায়েত দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে।
১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো জনকল্যাণে যৌথ প্রকল্পগুলি নিয়ে বাংলাকে আর্থিকভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দিল্লিতে পর্যন্ত সেই প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছিল। কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে কলকাতায় ২ দিনের ধর্নায়ও বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই অভিযোগে গত মে-তে ৩২ ঘণ্টার ধর্নায় বসে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। গত মাসের গোড়ায় বকেয়ার দাবিতে আন্দোলন চরমে পৌঁছয়। ধর্নায় গিয়ে দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল সাংসদরা। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। তার আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক-দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তরা আলোচনার টেবিলেও বসেন। তবু কাটেনি জট।