প্রচারে বেরিয়ে দলীয় সমর্থকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সারলেন তৃণমূল প্রার্থী রচনা

সিঙ্গুর: তিনি পর্দার নায়িকা। অনেক সিনেমাতে গরিব পরিবারের মেয়ে কিংবা গরিব নায়কের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। মাটির বাড়ি। দাওয়ায় বসে খাওয়া। সিনেমার পর্দায় এসব ফুটিয়ে তুলেছেন। এবার বাস্তবের মাটিতে দাওয়ায় বসে খেলেন হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাটির থালায় ভাত, বড়ি ভাজা, বেগুন ভাজা, শুক্তো তৃপ্তি করে খেলেন। আর সবচেয়ে খুশি হলেন টক দই খেয়ে। আর সিঙ্গুরের টক দই ভালো হওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করলেন ‘দিদি নম্বর ওয়ান’।

চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে রচনার উপর আস্থা রেখেছে তৃণমূল। এই আসনের বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। এবারও তিনি বিজেপির প্রার্থী। একসময় ২ জনে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি সিনেমায় পর্দা ভাগ করেছেন। কখনও হরিহর আত্মা আবার কখনও পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী রূপে দেখা গিয়েছে সিনেমায়। এবার বাস্তবে প্রতিদ্বন্দ্বী লকেট ও রচনা। তাঁদের দু’জনের অভিনীত সিনেমার বক্তব্য নিয়ে মিমও তৈরি হয়েছে। সেসব দূরে সরিয়ে প্রচারে জোর দিয়েছেন দুই অভিনেত্রী।

শনিবার সিঙ্গুরে প্রচারে যান রচনা। প্রচারের ফাঁকে চৌখণ্ডীপোতায় মানিক বাগ নামে এক দলীয় সমর্থকের বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন করেন তিনি। মাটির বাড়ি। টালির চাল। সেই বাড়ির দাওয়ায় বসে খেলেন রচনা। সঙ্গে ছিলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না ও তাঁর স্ত্রী করবী মান্না। করবী মান্না হরিপালের বিধায়ক। সবার সঙ্গে মাটিতে পাত পেড়ে খেয়ে খুশি রচনা। বললেন, ‘এমন করে কখনও খাইনি। খুব ভালো লাগল। এত ভালোবেসে আপ্যায়ন করলেন, আমি খুব আনন্দ করে খেলাম। আর মাটির বাড়ি ঠান্ডা হয়, গরমে খুব ভালো লাগল।’ এরপরই কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন আবাস যোজনা নিয়ে। তৃণমূল প্রার্থী বলেন, ‘আবাস যোজনার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে ওঁরা পাকা বাড়ি করতে পারেননি।

দিনের পর দিন কষ্ট করে থাকছেন। এরকম অনেকেই কষ্ট করে আছেন। তাঁদের কথা শুনে খারাপ লেগেছে। তাঁরা ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকছেন, কখন ঝড়-জল হবে আর বাড়ি ভেঙে পড়বে। বা টালি উড়ে যাবে।’ সংসদে যেতে পারলে তিনি বিষয়টি উত্থাপন করবেন বলে জানালেন। সজনে ডাটা, বড়ি ভাজা আর লঙ্কা তাঁর প্রিয়। মধ্যাহ্নভোজে তা পেয়ে খুব খুশি রচনা। আর সবচেয়ে খুশি হয়েছেন টক দই খেয়ে। বললেন, ‘এমন দই কলকাতায় পাই না। এত ভালো দই এখানকার। আমি তো ভাবছি যতবার আসব, এখান থেকে দই নিয়ে যাব।’

সিঙ্গুরের দই কেন এত ভালো, তারও ব্যাখ্যা দিলেন তৃণমূল প্রার্থী। বললেন, ‘সিঙ্গুরের মাটি এত গাছ ও ঘাস-পালায় ভর্তি। আর সেগুলো গরুতে খাচ্ছে। সেগুলো খেয়ে হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে। এর ফলে দুধটা এত ভালো হয়। সেখান থেকে দইটা ভালো হয়।’ এরপরই বেচারাম মান্নার প্রশংসা করে বলেন, বেচারামদা পরিবেশটাই এত সুন্দর করে রেখেছে। সেজন্য এখানকার গরু ভালো ঘাস-পালা খেতে পায়। এর আগে প্রচারে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, চারিদিকে শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। প্রচুর কারখানা হয়েছে। যা নিয়ে মিম ছড়িয়েছে। এদিন বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন রচনা। বলেন, তিনি যা দেখেছিলেন, সেটাই বলেছিলেন। তবে মিমকে খারাপভাবে দেখছেন না তিনি। এতে তাঁর প্রচারই হচ্ছে বলে মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − 2 =