এক ম্যাচ, নানা পরিস্থিতি। ছোট টার্গেট। দুর্দান্ত ব্যাটিং। বৃষ্টি বিরতি। বোল্ট-বুমরা-অশ্বিনীর ত্রিফলা আক্রমণ। আবার বৃষ্টি। দু-দিনের ম্যাচ এক ওভারে জয় গুজরাট টাইটান্সের! কী, সব ঘেঁটে গেল তো? পরিস্থিতি এমনই তৈরি হল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে শীর্ষস্থান দখল করল গুজরাট টাইটান্স। তবে কে শীর্ষে গেল, হার-জিত দিয়ে এই ম্যাচ বিচার করা কঠিন। প্রতিটা মুহূর্তেই নতুন নতুন টুইস্ট। কখনও হরর আবার কখনও সাসপেন্স মুভির মতো। সব মিলিয়ে এক কথায় বোঝা এবং বোঝানো কঠিন, এমন একটা ম্যাচ দেখা গেল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের এ মরসুমে। ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়মে ৩ উইকেটে জয় টাইটান্সের। একটু না হয় ধাপে ধাপে বলা যাক।
মুম্বই টানা জিতে আসছিল। দুরন্ত ছন্দে ছিল গুজরাট টাইটান্সও। আত্মবিশ্বাসী দু-দলের লড়াই জমজমাট হবে এমনটাই প্রত্যাশা। হলও সেটাই। ২ পয়েন্ট দিয়ে হার-জিত বিচার করা যাবে না এই ম্যাচকে। টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নেন টাইটান্স ক্যাপ্টেন শুভমন গিল। শুরুতেই মুম্বইয়ের দুই ওপেনার রায়ান রিকলটন ও রোহিত শর্মাকে ফেরান মহম্মদ সিরাজ ও আর্শাদ খান। এখান থেকে ইনিংস মেরামতি করেন উইল জ্য়াকস ও সূর্যকুমার যাদব। এরপর রশিদ খান ও সাই কিশোরের কামাল। সঙ্গী জেরাল্ড কোৎজে। পরপর উইকেট হারাতে থাকে মুম্বই। লোয়ার অর্ডারে করবিন বশ ২২ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ১৫৫ রান তোলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
রান তাড়ায় শুরুতেই সাই সুদর্শনের উইকেট হারায় টাইটান্স। ক্যাপ্টেন শুভমন গিল ও জস বাটলার অনবদ্য ইনিংস খেলেন। ব্যাটিংয়ের সময় হেলমেটে বল লেগেছিল করবিন বশের। কনকাশন পরিবর্ত হিসেবে বাঁ হাতি পেসার অশ্বিনী কুমারকে নামায় মুম্বই। তিনি ফেরান জস বাটলারকে। তাতেও অবশ্য চাপে পড়েনি টাইটান্স। কিন্তু এরপরই বৃষ্টি এবং টার্নিং পয়েন্ট।
শেষ ৬ ওভারে ৪৯ রান প্রয়োজন ছিল গুজরাট টাইটান্সের। ডিএলএস পার স্কোরে তখনও এগিয়ে টাইটান্স। বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হয়। ফের শুরু হতেই বুমরার ব্রিলিয়ান্স। দুর্দান্ত একটা ডেলিভারিতে শুভমনের উইকেট ছিটকে দেন। বৃষ্টির আগে টাইটান্সের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১০৭ (১৪ ওভার)। বৃষ্টির পরই তা ১৮ ওভারে হয়ে যায় ১৩২-৬! ফের বৃষ্টি নামে। ম্যাচ বন্ধ। অপেক্ষা বাড়ে। নতুন তারিখও পড়ে যায়। যেন দু-দিনের ম্যাচ!
খেলা শুরু হতে মাঝরাত পেরিয়ে যায়। ডাকওয়ার্থ লুইসে পরিবর্তিত টার্গেট দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১৪৭ রান। অর্থাৎ গুজরাট টাইটান্সকে এক ওভারে ১৫ রান তুলতে হত। বোলিং করেন দীপক চাহার। ক্রিজে রাহুল তেওয়াটিয়া ও জেরাল্ড কোৎজে। প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন রাহুল। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গল। শেষ ৪ বলে ১০ রান প্রয়োজন ছিল। তৃতীয় ডেলিভারিতে ছয় মারেন কোৎজে। ৩ বলে ৪ রান! চাহারের নো বল এবং সিঙ্গল। চতুর্থ ডেলিভারিতে রাহুল সিঙ্গল নিয়ে স্কোর সমান করেন। কিন্তু পঞ্চম বলে আউট কোৎজে। ক্রিজে আসেন আর্শাদ খান। শেষ বলে সিঙ্গল। হার্দিকের থ্রো উইকেট মিস করে। না হলে ম্যাচটা সুপার ওভারেও গড়াতে পারত। রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নেয় গুজরাট টাইটান্স। আরসিবির সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও নেট রান রেটে শীর্ষে টাইটান্স।