ব্যারাকপুর: দুই বান্ধবীর সম্পর্ক। আচমকাই সম্পর্কে টানাপোড়েন। আর তার জের যে এমনটা হতে পারে ভাবতে পারেননি কেউ। নোয়াপাড়া থানার ইছাপুর আনন্দমঠ সি ব্লক এলাকায় বান্ধবীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হল তরুণীর দগ্ধ মৃতদেহ। যে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে, তাদের দাবি, ওই তরুণী কথা বলতে বলতে কখন গিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বুঝতে পারেননি তাঁরা। তবে মৃতের পরিবারের দাবি, তাদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার টিটাগড় থানার ব্যারাকপুর আদর্শপল্লিতে থাকতেন মৃতা তরুণী। তিনি বউটিশিয়ান কোর্স করছিলেন। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’ বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ইছাপুরের একটি মেয়ের সঙ্গে তাদের মেয়ের পরিচয় হয়। দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গভীর হয়ে ওঠে। মৃত তরুণীর মায়ের দাবি, দুই মেয়ের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। প্রথমে তাঁরা এ নিয়ে আপত্তি করে তরুণীকে বোঝাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন তথ্য দেখিয়ে পরিবারকে বুঝিয়েছিলেন মেয়ে ও মেয়ের মধ্যে এমন সম্পর্ক হয়। দুই বাড়িতেই দু’জনের যাতায়াত ছিল। জানা গিয়েছে, এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছেন ইছাপুরের তরুণী। সম্প্রতি সে এই সম্পর্ক থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে দুই বান্ধবীর মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল।
মৃতার মায়ের দাবি, তাঁর মেয়ে জানিয়েছিল বান্ধবীকে ছাড়া থাকতে পারবে না। তাঁর অভিযোগ, ওই মেয়েটির পরিবারই বাড়িতে ডেকে হাত-পা, মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে তাঁদের মেয়েকে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তাঁদের মেয়ে সাইকেল, ব্যাগ ও মোবাইল নিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও বান্ধবীর বাড়ি থেকে মৃতার মোবাইল ফোন, ব্যাগ ও সাইকেলের হদিশ মেলেনি। মৃতার পরিবারের দাবি, মেয়ের মোবাইলের কললিস্ট ঘেঁটে পুলিশ তদন্ত করলেই রহস্য প্রকাশ্যে এসে পড়বে। রবিবার বেলায় মৃতার পরিবার নোয়াপাড়া থানায় মেয়ের বান্ধবী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তবে অভিযুক্ত ছাত্রী জানিয়েছে, ওইদিন সন্ধেয় সে মায়ের সঙ্গে স্কাউটে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে দেখে বান্ধবী দরজার সামনে দাঁড়িয়ে। ঘরে ঢুকলে বান্ধবী কথা বলার জন্য জোরাজুরি করতে থাকে। তার কথায়, ‘ওকে বলেছিলাম, কয়েকদিন একটু একা থাকতে চাই। তারপর ও ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আমি পাশেই পিসির বাড়ি চলে গিয়েছিলাম।’ অভিযুক্ত ছাত্রীর মা জানান, ‘মেয়ের বান্ধবী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর কখন আবার দরজা খুলে দোতলায় উঠে গেছে, তা টের পাইনি। স্থানীয়রা আগুন বলে চিৎকার করলে জানতে পারি। দোতলায় উঠে দেথি ও গায়ে আগুন দিয়েছে। ওকে উদ্ধার করে ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে।’ ™ুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।