ইতিহাস বদলাল উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh)। ৩৫ বছরের রীতি ভেঙে পরপর দু’বার সরকার গড়ল একই দল। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বিপুল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়ছে বিজেপি (BJP)। তিনশো না পেরোক, আড়াইশোর বেশি আসনে পদ্ম ফুটিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। নিজেও জিতেছেন বিপুল ভোটে। অথচ ভোটের আগেই দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই ক্ষোভের ঝড় বয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। তবু সেই ক্ষোভের প্রভাব পড়ল না ভোটবাক্সে!
গত ৫ বছর ধরে উত্তরপ্রদেশে কখনও ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে দলিতদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে তো কখনও আবার গেরুয়া শিবিরের মন্ত্রীর ছেলের গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়েছেন আন্দোলনকারী কৃষকরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্ষণের মর্মান্তিক খবরও সামনে এসেছে। করোনায় মৃত্যুর তথ্য লুকোতে গঙ্গায় দেহ ভাসানোর অভিযোগও উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। তার পরও ভোটবাক্সে সেই ক্ষোভের কার্যত কোনও প্রতিফলনই হল না। লখিমপুর খেরি, হাথরাসের মতো এলাকাতেও প্রায় সব আসন জিতে নিলেন মোদি-যোগীর জুটি। উত্তরপ্রদেশের সামাজিক সমীকরণটা বরাবরই জটিল। কোথাও দলিতদের শক্ত ঘাঁটি তো কোথাও আবার গভীরে রয়েছে জাঠদের শিকড়। কোথাও উচ্চজাতের ব্রাহ্মণকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা চালাতে হয় তো কোথাও আবার ক্ষত্রিয়দের ভোট টানতে কষতে হয় অন্য অঙ্ক। এই জটিল সমীকরণটা জলবৎ তরলং করেছে বিজেপি। তাই ভোটের মুখে একের পর এক দলিত নেতা বেরিয়ে গেলেও পদ্মের ভোটব্যাংক অটুট রয়েছে। যতটুকু ভোট সাইকেলের ঝুলিতে স্থানান্তরিত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ভোট মায়াবতীর ঝুলিতে থেকে এসেছে গেরুয়া শিবিরে।
তবে শুধু বিজেপির ক্যারিশমা নয়, গেরুয়া শিবিরের এই চোখ ধাঁধানো ফলাফলের পিছনে কিছুটা মায়াবতীর নিষ্ক্রিয়তাও দায়ী। ফলত তাঁদের দখলে থাকা দলিত ভোটের বড় অংশ টেনে নিয়েছে বিজেপি। আর এই ভোট কাটাকাটির অঙ্কে ব্যাপক সুবিধা পেল গেরুয়া শিবির। ফলস্বরূপ আরও ৫ বছর যোগীরাজ দেখবে উত্তরপ্রদেশ।