কলকাতা: সোমবারই ব্যক্তিগত, কাজের চাপ দেখিয়ে মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের তিন-তিনটি ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবারও এসএসসি মামলা থেকে অব্যাহতি চাইল কলকাতা হাই কোর্টের আরও এক বেঞ্চ। এদিন শুরুতে মামলাটি উঠেছিল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিচারপতিরা সরে দাঁড়ান। মামলাটি ফের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হওয়ার সম্ভাবনা। সূত্রের খবর, এ নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।চারটি ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ না করায় মঙ্গলবার তড়িঘড়ি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে যান আইনজীবীরা। কিন্তু আইনজীবীদের একরকম ভর্ৎসনা করেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা আদালতের সৌজন্য বজায় রাখুন। যখন তখন মামলা মেনশন করতে চলে আসছেন কেন?’
৯৮ জনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির দিকে আঙুল উঠেছে। আগেই উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিনহা-সহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা ডিভিশন বেঞ্চে যান। ডিভিশন বেঞ্চ শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদে সোমবার পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিলেও, বাকি চার জনের ক্ষেত্রে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি। সোমবার, একের পর এক বিচারপতি সরে দাঁড়ানোয় এই মামলার শুনানি ডিভিশন বেঞ্চে হয়নি। ফলে সন্ধের পর উপদেষ্টা কমিটির চার সদস্যকে সিবিআই-অফিসে হাজিরা দিতে হয়েছিল।সোমবার রাতে নিজাম প্যালেসে তাঁদের প্রায় ছ’ঘণ্টা জেরা করা হয়েছে।মঙ্গলবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে সিবিআই প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছে।
এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় এদিন বলেন, প্রয়োজনে সিবিআই নিজের হেফাজতে নিতে পারবে এই চার জনকে।দরকারে শান্তিপ্রসাদ সিনহাকেও নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে তারা। যে ৯৮ জনরে নিয়োগ নিয়ে জট তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে পারবে সিবিআই।
বিচারপতি এদিন মন্তব্য করেন, ‘যে যোগ্য প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে চোখের জল ফেলছেন তাঁদের দুর্দশা দূর করার জন্য আমি যা করার করব। যারা অবৈধভাবে নিযুক্ত হয়েছেন, তাদের জন্য আমি একাই যথেষ্ট। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছি। টাকা কোথা থেকে কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে সেটা আমি খুঁজে বার করব।’ আদালতে রাজ্যের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক জানান, ‘অবৈধ নিয়োগ হয়ে থাকলে, আদালত নির্দেশ দিলে সেই সব নিয়োগ বাতিল করতে রাজ্য প্রস্তুত আছে। আমি উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।’
এদিকে, এসএসসি মামলা অব্যাহতি নিল আরও এক ডিভিশন বেঞ্চ। এ নিয়ে মোট চারটি বেঞ্চের বিচারপতিরা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মামলা শোনেননি। ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়।