চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০১৭ সালের বন্যার ত্রাণের টাকা নয় ছয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আস্তে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, সরকারি ত্রাণের টাকা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে না দিয়ে সরাসরি ওই পঞ্চায়েতের শাসকদল তৃণমূল প্রধানের স্বামী, উপ-প্রধানের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট এবং এক পঞ্চায়েত সদস্যের নিজের এবং তার পরিবারের একাধিক সদস্যের হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকী, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনজন বিজেপি সদস্যের অ্যাকাউন্টে নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্ষতি-পূরণের টাকা ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। এদিকে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী, উপ-প্রধান সহ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যর নিজের অ্যাকাউন্টে পাওয়া ত্রাণের টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন। এদিকে জেলাশাসক সহ একাধিক প্রশাসনের আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আশানুরূপ ফল না মেলায় স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং বোরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্যার ত্রাণের দুর্নীতি নিয়ে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ওই মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের প্রধান সহ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয় হাইকোর্টের নির্দেশে। এই ঘটনার পরেই আবার এই ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্যা ত্রাণ দুর্নীতির কথা সামনে আসতেই হরিশ্চন্দ্রপুরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকার সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, শাসকদলের প্রধানের স্বামী আধুল রশিদ, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান তথা তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি নুর আজম, এক পঞ্চায়েত সদস্য অলোক পোদ্দার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তিন বিজেপি সদস্যের অ্যাকাউন্টেও বন্যা ত্রাণের ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে এলাকার সিপিএম নেতৃত্বের তালিকা প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, অ্যাকাউন্ট নম্বরের নাম বদলে এই বেআইনি কাজ করা হয়েছে। বিশাল অঙ্কের টাকা এই ভাবে নয়-ছয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এর বিরুদ্ধে তারা অবিলম্বে আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। যদিও প্রধান আখতারী খাতুনের স্বামী আধুল রশিদের বক্তব্য, ভুলবশত টাকা ঢুকে ছিল। সেটা আমরা ফেরত দিয়েছি। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।