নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: পানাগড়ের রেল পাড়ে ৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ওই বাড়ির এক মহিলাকে তাঁর থেকে গ্রেপ্তার করে বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ মহকুমা আদালতে পেশ করে কাঁকসা থানার পুলিশ। ধৃতের নাম রিঙ্কি বিশ্বকর্মা। তিনি মৃত সিমরনের কাকিমা। পুলিশ গ্রেফতার কবে ধৃতকে ১০ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিলেন মহকুমা আদালতের বিচারক। তবে তদন্তের স্বার্থে এবং আসল অপরাধীকে ধরতে এই মুহূর্তে পুলিশ এই ঘটনার বিষয়ে কোনও তথ্য সংবাদমাধ্যমকে জানায়নি।
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাসের ১০ তারিখ পানাগড়ের রেলপাড়ে রাজা বিশ্বকর্মা নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ। মৃতরা হলেন সিমরন বিশ্বকর্মা (২৩), সীতা দেবী (৭০) ও সোনু বিশ্বকর্মা (২১)। সীতাদেবী ও সোনুর বাড়ি ঝাড়খণ্ডে।
জানা গিয়েছে, রেলপাড়ের বাসিন্দা ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে অসমে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছোট মেয়ে সিমরন বাড়িতেই ছিলেন। সিমরনের দিদিমা সীতাদেবী ও মামা সোনু তাঁদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সিমরনের কাকিমা রিঙ্কি বিশ্বকর্মা জানিয়েছিলেন, ওই দিন তিনি বাড়িতে কাজ করছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মাথায় হেলমেট পড়ে বাইকে করে এক ব্যাক্তি তাঁদের বাড়িতে আসেন। কিছুক্ষণ পর আবার বেরিয়ে চলে যান। প্রতিবেশীরা সোনুকে বাড়ির উঠোনে, বাকিদের ঘরের ভেতরে তাও আলাদা আলাদা ঘরে খাটের ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় এবং ঘটনার তদন্ত শুরু করে।
এলাকাবাসীরাও মোটরসাইকেলে করে হেলমেট পড়ে আসা এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেছিলেন। তিন জনকে কে এবং কী ভাবে খুন করা হয়, তা নিয়ে ধ¨ে পড়ে যায় পুলিশ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি ইস্ট কুমার গৌতম ঘটনার দিন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন ৩ জনকেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। কিন্তু কী উদ্যেশ্যে তা¥দের খুন করা হয়, তার সঠিক কারণ পুলিশ জানতে পারেনি।
এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হেলমেট পড়া ব্যক্তিরও কোনও সন্ধান মেলেনি বলে দাবি। এই ঘটনায় সিমরন ও তাঁর মামা ওদিদার মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ তদন্তে নেমে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে একাধিক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনির সন্ধান পায়নি।