তিন বছর বাদে রেপো রেট (Repo Rate) অর্থাৎ ব্যাংকগুলিকে দেওয়া সুদের হার বাড়াল রিজার্ভ ব্যাংক। তাও অনেকটা। একধাক্কায় রেপো রেট বাড়িয়ে দেওয়া হল ৪০ বেসিস পয়েন্ট। যার ফলে রিজার্ভ ব্যাংকের নতুন রেপো রেট দাঁড়াচ্ছে ৪.৪০ শতাংশ। রেপো বাড়ার ফলে বাড়ি-গাড়ির জন্য নেওয়া ব্যাঙ্কঋণের সুদের হারও বাড়ার সম্ভাবনা প্রবল। অর্থাত্ বাড়তে পারে ইএমআই।
রিজার্ভ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই শেয়ার বাজারে বড়সড় ধস নামে। নিমেষে ১৩০০ পয়েন্ট নেমে যায় শেয়ার বাজারের সূচক। শেয়ার বাজারের হিসাব বলছে বুধবার গত ৮ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে রক্তাক্ত দিনের সাক্ষী থাকল দালাল স্ট্রিট। অথচ, এলআইসি’র আইপিও আসার দিন শেয়ার বাজার চাঙ্গা হওয়ার কথা ছিল।
মঙ্গলবার হঠাতই রিজার্ভ ব্যাংকের (Reserve Bank) মানিটারি পলিসি নির্ধারণের বৈঠকে রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, মানিটারি পলিসি কমিটিতে সর্বসম্মতিক্রমে রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরবিআই গভর্নর এদিন মেনে নিয়েছেন যে ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের উপর বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতেই রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শক্তিকান্ত দাস (Shaktikanta Das) এদিন বলেন, খাদ্যসামগ্রীর যে ১২টি বিভাগ আছে তার মধ্যে ৯টির দামই মার্চ মাসে ছিল ঊর্ধ্বমুখী। খাদ্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরবিআই।
শুধু রেপো রেট নয়, ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও-ও। একই দিনে রিজার্ভ ব্যাংকের এই জোড়া সূচক বৃদ্ধির অর্থ হল ব্যাংকগুলি ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে আগের তুলনায় বেশি সংযত হবে। যার ফলে কিছুটা হলেও বাজারে নগদের জোগান নিয়ন্ত্রিত হবে। রিজার্ভ ব্যাংকের আশা, নগদের জোগান কমলে বা সহজে ঋণ না পেলে সাধারণ মানুষ বিলাসবহুল পণ্যের কেনাবেচা কমিয়ে দেবে। শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতেই অর্থ ব্যয় করবেন। যা বাজারে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, মুদ্রাস্ফীতিকে বাগে আনতে সাধারণত সুদ বাড়ানো হয়। কিন্তু আরবিআই হঠাৎ যখন সুদের হার বাড়িয়ে দিল, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকেও তখন ‘মার্জিনাল কস্ট’-এর ভিত্তিতে তাদের ঋণের হার বাড়াতে হতে পারে।