২১ টি গাছের অকাল মৃত্যু, পোকার আক্রমণ না বিষক্রিয়া? ধোঁয়াশায় স্থানীয়রা 

২১টি গাছের অকাল মৃত্যুতে মন খারাপ স্থানীয়দের-কেউ বলছেন পরিকল্পনা করেই গাছগুলোকে মারা হয়েছে আবার কেউ বলছেন পোকার আক্রমণেই গাছেদের মৃত্যু। গাছগুলোতে স্লো পয়জনিংয়ের ব্যবহার হয়েছে পঞ্চায়েত জানা সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থা নিল না উঠছে প্রশ্ন। ভর দুপুরে যে গাছের নীচে একটু ছায়ার খোঁজে স্থানীয় থেকে দুর দূরান্তের মানুষের আনাগোনা দেখা মিলত ঠিক সেখানেই আজ সার সার দাড়িয়ে গাছেদের কঙ্কাল। এই ঘটনা বেশি দূরের নয় উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রুদ্রপুর থেকে মাকালতলা যাওয়ার রস্তার বাঘাডাঙা মোড় এলাকার ঘটনা। যে রাস্তার দুপাশ দিয়ে সারি সারি রয়েছে শতাধিক শিরিষ গাছ সেখানে বাঘাডাঙা মোড় থেকে মাকালতলা যাওয়ার রাস্তার শুরুতেই লাইন দিয়ে রাস্তার দু’ধরে ২১টি শিরিষ গাছের অকাল মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রশ্ন? যদি প্রাকৃতিক কোনও কারণেই এই গাছেদের মৃত্যু হয় তাহলে বাকি কাজগুলোর কেন কিছু হল না? গাছের ছাল উঠে পাতা ঝরে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া এই কঙ্কালসার এই শিরিষ গাছগুলোর এমন চেহারা হওয়ার কারণ নিয়ে ইতি মধ্যেই নানাজনের নানা মত জানিয়েছেন। ষাটোর্ধ্ব স্থানীয় এক চাষি জুলফিকার মণ্ডল জানিয়েছেন এই গাছের বয়স প্রায় ৩০-৪০ বছর আমরা চাষি মানুষ একটু বিশ্রাম নেওয়ার জন্য মাঝে মাঝে এই গাছের ছায়ায় এসে বসতাম, তিনি বলেন হয়তো পোকার আক্রমণেই গাছগুলো মারা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা যুবক রিপন আর্য জানিয়েছেন আসে পাশের সব গাছ বেচেঁ আছে একপাশ দিয়ে ২১টি গাছ মারা গেল এটা মেনে নিতে পারছি না এটা পরিকল্পিত বলেই আমার মনে হচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন যেভাবে দিন দিন বাড়ছে যার ফলে এই ধরনের ঘটনা প্রকৃতির জন্য খুব খারাপ খবর। পাশাপাশি ওই যুবক বলেন আগামী বর্ষায় বন্ধুরা মিলে এই মৃত গাছের ফাঁকে ফাঁকে নতুন গাছ লাগাব। এই নিয়ে কথা বলেছিলাম বৃক্ষ প্রেমী বঙ্কিম চক্রবর্তীর সঙ্গে তিনি বলেন, কেউ বা কারা নিজেদের স্বার্থে এই গাছগুলোকে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন। গাছ হল মায়ের সমান-আমরা যেখানে বলি ‘গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান’ সেখানে দাঁড়িয়ে গাছকে হত্যা করা হচ্ছে এই ঘটনার সঠিক বিচারের দাবি রাখছি। গাছের অকালমৃত্যু প্রসঙ্গে ‘উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের ছাত্র আলোক মণ্ডল জানিয়েছেন, আমাদের এই সব এলাকায় জলের তেমন কোনও অসুবিধে নেই, আর যদি এই মৃত্যুর পিছনে প্রাকৃতিক যদি কোনো কারণ থাকত তাহলে বাকি গাছেরও তো ক্ষতি হত কিন্ত এখানে দেখা গেল পর পর এই ২১ টি গাছ ছাড়া বাকি সব গাছ সতেজ এবং সবুজ। তাই তিনি বলেন, গাছের গোড়ায় ড্রিল করে বিষ প্রয়োগ করে অনেক সময়ই গাছকে ধীরে ধীরে মেরে ফেলা হয়। তখন গাছ শুকিয়ে যায়, তার ছাল উঠে যায়, পাতাও ঝরে পড়ে এ ক্ষেত্রেও এমন কিছু হতে পারে বলে তিনি বলেন। আর গাছের ক্ষতি হলে সেই কুপ্রভাব আমাদের উপরই এসে পড়বে। স্থানীয় কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পুষ্প বিশ্বাস বলেন, হ্যাঁ স্থানীয় আমাদের পঞ্চায়েতের সদস্যের মাধ্যমে একবার শুনেছিলাম যে গাছগুলোকে কেউ শয়তানি করে স্লো পয়জন দিয়ে মেরে ফেলেছে। তদন্তের দাবি করবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন হ্যাঁ তদন্তের জন্য বনদপ্তরের মন্ত্রীকে জানাব বিষয়টি। উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি হাবড়াতেও সার সার গাছের অকাল মৃত্যুর ঘটনায় উঠছে নানা প্রশ্ন তাহলে কি এর পেছনে রয়েছে বড় কোনও চক্র? নাকি সর্ষের মধ্যেই ভূত? আগামীদিনে এটা বন্ধ না হলে প্রকৃতির জন্য অনেক বড় ক্ষতি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × two =