নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: ফের বাস ধর্মঘটের জেরে নাকাল যাত্রীরা। সোমবার সকাল থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। বেসরকারি বাস না মেলায় অগত্যা সরকারি বাসেই এক প্রকার ঝুলতে ঝুলতে গন্তব্যে পৌঁছন যাত্রীরা। তবে এবার বর্ধমান শহরে বাস ধর্মঘটের জেরে আসানসোল থেকে বর্ধমান যাওয়ার বেসরকারি বাস বর্ধমানে ঢুকতে না পেরে বিকেল নাগাদ পানাগড়ে ফিরে এসে রাস্তার বিভিন্ন প্রান্তে বাস দাঁড় করিয়ে দেন চালকরা।
চালকরা দাবি করেন, মালিকরা জানিয়েছেন বাস চলবে না, তাই তাঁরাও বাস দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। হঠাৎ করে কোনও আগাম নোটিস না দিয়ে বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ থাকায় সকাল থেকেই যাত্রীদের হয়রানির স্বীকার হতে হয়। কী কারণে হঠাৎ করে এই ধর্মঘট তা সঠিক ভাবে কেউ জানাতে পারেননি। বাসের চালক উত্তম মণ্ডলের দাবি, রবিবারই বর্ধমান বাস স্ট্যান্ডে তাঁদের বাস না নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছিল। তাই সকালে বর্ধমান বাস স্ট্যান্ডে ঢুকতে না পেরে অগত্যা পানাগড়ের রণডিহা মোড়ে বাস নিয়ে এসে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বাস কর্মীদের সুরক্ষার দাবি নিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন আগে পরিবহণ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের লাগু করা নতুন নিয়মের জেরে বাস মালিকরা ধর্মঘট ডেকেছিলেন। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল। ফের আগাম নোটিস না দিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ রাখার আগামী কয়েকদিন ফের যাত্রীদের হয়রানির স্বীকার হতে হবে।
অন্যদিকে সোমবার সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনই বাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়তে হয় নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রীদের। সোমবার সকাল থেকেই বর্ধমানের আলিশা বাসস্ট্যান্ডে দেখা যায় সারি দিয়ে বিভিন্ন রুটের বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কয়েকদিন আগেও এভাবেই বাস বন্ধ হয়েছিল। এদিন সকালে বর্ধমানের বাসস্ট্যান্ডে এসে নাকাল হয়েছেন যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, কোনও ঘোষণা না থাকায় তাঁরা এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস পাননি। বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে অন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করতে হয়।
বাসমালিক বাবলু শর্মার দাবি, তাঁরাও ঠিক জানেন না কেন হঠাৎই বাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁরা সকালে এসেছেন। পরিষেবা দিতে চান। কিন্তু বাসের শ্রমিকরা অনড়। বাসের চালক, কন্ডাক্টর বা খালাসি কেউ কাজ করছেন না। ফলে বাসও চলছে না। দেখা গিয়েছে, বর্ধমান থেকে আরামবাগ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, জামালপুর সহ বিভিন্ন রুটের কোনও বাসই চলছে না। রায়না, খণ্ডঘোষ সহ দক্ষিণ দামোদরের সব বাস এখান থেকেই ছাড়ে। সেগুলিও বন্ধ রয়েছে।
জানা গিয়েছে, নতুন কেন্দ্রীয় পরিবহণ আইনের বিরোধিতায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসকর্মীরা। তবে বিরক্ত নিত্যযাত্রীদের প্রশ্ন, বাসকর্মীরা অবশ্যই তাঁদের দাবির সমর্থনে আন্দোলন করতে পারে। সেক্ষেত্রে এভাবে কিছু না বলে হঠাৎ পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে যাত্রীদের বিপদে ফেলার কোনও অর্থ হয় না।