ভারত সফরের দ্বিতীয় দিনে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মোদিকে (Narendra Modi) ‘খাস দোস্ত’ (বিশেষ বন্ধু) (Special Friend) বলে সম্বোধন করেন বরিস। বৃহস্পতিবার ভারত সফরের প্রথম দিনে এ দেশে পা রেখেছেন তিনি। গুজরাতে তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন নৃত্যশিল্পীরা। মোদির দেশের অতিথি হয়ে নিজের মুগ্ধতা জাহির করেছেন বরিস। এই রাজসিক অভ্যর্থনার জন্য মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ দেশের আসার পর নিজেকে শচিন তেন্ডুলকরের মতো মনে হচ্ছে। চার দিকে (আমার) বড় বড় হোর্ডিং দেখে অমিতাভ বচ্চনের মতোও লাগছিল!’ মোদির সঙ্গে হাতে হাত রেখে চিত্রগ্রাহকদের জন্য পোজ দেন তিনি।
এদিন রাষ্ট্রপতি ভবনে জমকালো অভ্যর্থনা জানানো হয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গার্ড অফ অনারে (Guard Of Honour) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। জমকালো আপ্যায়নে অভিভূত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
মোদির নিজের রাজ্য গুজরাতেও তাঁর অভ্যর্থনার প্রসঙ্গও শুক্রবারে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে উল্লেখ করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী (Britain’s PM)। বরিসের মন্তব্য, ‘আমাদের স্বাগত জানাতে (গুজরাতের) মানুষ অসাধারণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে। এ ধরনের আনন্দময় অভ্যর্থনা আগে কখনও পাইনি।’
শুক্রবার ভারত-ব্রিটেন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাতে দু’দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কৌশলগত ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর পাশাপাশি কূটনীতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়েই আলোচনা করেছেন দুই রাষ্ট্রনেতা। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অংশীদারিত্ব এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ও এই বৈঠকের মূল আলোচ্যের মধ্যে ছিল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন ‘গত বছরেই আমরা কৌশলগত পার্টনারশিপে কাজ শুরু করেছি। স্বাধীন বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা চলছে দুই দেশের মধ্যে।’ প্রসঙ্গত, বরিস জনসন চান যেন দীপাবলীর আগেই মুক্ত বাণিজ্য সংক্রান্ত চুক্তি হয়ে যায় দুই দেশের মধ্যে। ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে যেন কূটনৈতিক সমস্যা না হয়, তা নিয়েও কথা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। ভারতের প্রতিবেশী আফগানিস্তানে সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আমরা চাই আফগানিস্তানের মাটি থেকে যেন অন্য দেশের উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা না হয়।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, ‘আজ আলোচনা খুবই ভাল হয়েছে আমাদের মধ্যে। আশা করি এতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।’ নাম না করে রাশিয়া এবং চিনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘গত বছর থেকে স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির ক্ষমতা বেড়ে গিয়েছে। সেই আবহে আমাদের দুই দেশের উচিত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল দখলমুক্ত রাখা। দেশেই শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’, জানিয়েছেন বরিস। ভারতের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘আমি নিজেও ভারতের করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছি এবং তাতে আমার ভালই হয়েছে।’
বৈঠক শেষে দুই রাষ্ট্রনেতাই সহমত—অবিলম্বে ইউক্রেনে হিংসা বন্ধ করা উচিত। মোদি বলেন, ‘ইউক্রেনে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং সমস্ত সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা আলোচনা এবং কূটনৈতিক পদ্ধতির উপর জোর দিয়েছি। সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে বজায় রাখার গুরুত্ব নিয়ে আবারও মত ব্যক্ত করা হয়েছে।’