একবছর আগে এমন দিনেই তৃতীয়বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের সেই বর্ষপূর্তিতে বাংলাকে দেশের সেরা রাজ্য হিসাবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করার পাশাপাশি কুৎসাকারিদের উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন। তুলোধোনা করলেন বিজেপি তথা কেন্দ্রকে।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে সরকারের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১১ বছরের সরকার।এই ১১ বছরে আমি যা করে দিয়েছি, চ্যালেঞ্জ করছি আমাকে ফেস করুন। আমি ফেস করতে প্রস্তুত। আমাকে চমকে লাভ নেই। ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।’
সরকারের বর্ষপূর্তিতে আরো কুড়ি লক্ষ মহিলাকে লক্ষ্মীর ভান্ডারের আওতায় এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইন্ডোরের অনুষ্ঠান থেকে রিমোট কন্ট্রোলে প্রতীকিভাবে প্রকল্পের সুযোগ প্রদান করেন।
তিনি জানান,এর ফলে রাজ্যের ১ কোটি ৫৩ লক্ষাধিক মহিলাকে এলেন লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায়।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করেছি। আর ওরা করেছে কুৎসার ভাণ্ডার। আমরা মা-বোনেদের কথা দিয়েছিলাম, দায়িত্ব পেলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার করব। যা কথা দিয়েছিলাম তা করেছি। আর ওরা শুধু ভাষণ দিয়েই বেরিয়েছে।’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এখন রাজ্য সফরে রয়েছেন। এদিন তাঁর প্রসঙ্গে টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোঝাতে চেয়েছেন, অহেতুক বাংলাকে বদনাম করা বরদাস্ত করবেন না তিনি। কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলায় কেউ যাবেন না। ওখানে গেলে যে কেউ, যখন তখন খুন হয়ে যেতে পারেন’। অমিত শাহর নাম না করলেও এদিন মমতা বলেন, ‘কেউ যদি বলে বাংলায় গেলেই খুন হয়ে যাবে তাহলে আমার গায়ে লাগে। যে কোনও রাজ্যের থেকে বাংলা ভাল।’ সাম্প্রতিক একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ইউপি নয়। এমপি নয়। এটা বাংলা। এখানে একটা ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা হয়, রঙ দেখা হয় না।’
শ্লীলতাহানির ঘটনা বা হিংসার ঘটনা নিয়ে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম তা অ্যাজেন্ডায় পরিণত করছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেত্রী। তাঁর বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশে যখন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে, যখন ধর্ষিতা নাবালিকা থানায় গিয়ে ফের তাকে পুলিশ ধর্ষণ করে, তখন একই রকম বিক্রম এই সব সংবাদমাধ্যমে কেন দেখা যায় না। সম্ভবত তা এই কারণেই যে বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। যা কোনও ভাবে মেনে নেবেন তিনি ও তাঁর সরকার।