বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ক্রীড়াজগতের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন তিনি। ২০২০ টোকিও অলিম্পিক্সে ডিসকাস থ্রো ফাইনালে উঠে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। পদক না পেলেও ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে ক্রীড়াপ্রেমীদের মন জিতে নিয়েছিলেন তিনি। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকে পদক পেতেই পারেন তিনি, এমন আশা করেছিলেন অনেকেই। সেই কমলপ্রীত কৌর এবার ডোপিংয়ের অভিযোগে নির্বাসিত হলেন।
জানা গিয়েছে, স্ট্যানোজোলোল নামের ড্রাগ ব্যবহার করেছেন কমলপ্রীত। ওয়াডা অর্থাৎ ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ডোপিং এজেন্সির তালিকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই ড্রাগটি। নিয়মমাফিক পরীক্ষা করাতেই কমলপ্রীতের নমুনায় ধরা পড়ে স্ট্যানোজোলোল। উল্লেখ্য সোল অলিম্পিক্সে এই স্ট্যানোজোলোল পাওয়া গিয়েছিল কানাডার স্প্রিন্টার বেন জনসনের নমুনায়। ডোপ করার অভিযোগে একশো মিটার থেকে পাওয়া সোনা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল কানাডার দৌড়বীরের কাছ থেকে। নির্বাসিত করা হয়েছিল জনসনকে।
সেই নিষিদ্ধ ওষুধ পাওয়া গিয়েছে কমলপ্রীতের নমুনায়। সেই কারণেই তাঁকে কিছুদিনের জন্য নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এআইইউয়ের তরফ থেকে। প্রসঙ্গত, এআইইউ একটি স্বাধীন সংস্থা যারা বিভিন্ন খেলা এবং খেলোয়াড়দের দিকে নজর রাখে। কোনও নিয়মভঙ্গের ঘটনা ঘটলে এআইইউ তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। জানা গিয়েছে, অ্যাথলিটদের জন্য বরাদ্দ সাপ্লিমেন্টেই কোনও সমস্যা ছিল, যার ফলে কমলপ্রীতের শরীরে নিষিদ্ধ দ্রব্য পাওয়া গিয়েছে।
এআইইউ টুইট করে জানিয়েছে, “ডিসকাস থ্রোয়ার কমলপ্রীত কৌরকে কিছুদিনের জন্য নির্বাসনে পাঠান হচ্ছে। তাঁর শরীরে স্ট্যানোজোলোল পাওয়া গিয়েছে, যা ডোপ বিরোধী আইন ভঙ্গ করেছে।” একই সঙ্গে জানা গিয়েছে, জ্যাভলিন থ্রোয়ার শিবপাল সিংকেও একই অভিযোগে নির্বাসিত করা হয়েছে। এই শাস্তির ফলে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবেন না কমলপ্রীত। যার মধ্যে রয়েছে ২০২২ সালের এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস, বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপ-সহ আরও কয়েকটি টুর্নামেন্ট। ‘টার্গেট অলিম্পিক পোডিয়াম স্কিম’ অর্থাৎ অলিম্পিকে পদক পেতে পারে এমন সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের চিহ্নিত করে তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগেও সামিল ছিলেন কমলপ্রীত।
২০২০ সালের অলিম্পিকে ভারতীয় মহিলা ডিসকাস থ্রোয়ার হিসাবে সেরা পারফরম্যান্স করেন কমলপ্রীত। তারপরে দু’ বার জাতীয় রেকর্ড ভাঙেন তিনি। তবে ডোপিংয়ের অভিযোগে নির্বাসিত হওয়ার পরে কমলপ্রীতের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর কোচ রাখি ত্যাগী, জাতীয় কোচ রাধাকৃষণ নায়ার, এবং ভারতীয় অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের প্রতিনিধি আদিল সুমারিওয়ালা, কেউই এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।