মেদিনীপুরে নির্বাচনী প্রচারে ‘গদ্দার’কে নিশানা মমতার

তীব্র গরম উপেক্ষা করেই লোকসভা ভোটের জোরদার প্রচার চালাচেছন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা।  সমানতালে চলছে নিজেদের রাজনৈতিক দলের সপক্ষে গলা ফাটিয়ে বিরোধীদের তুলোধনা করার কাজ।

বৃহস্পতিবার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি বিরোধিতার সুর একেবারে সপ্তমে তুললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে তৃণমূলকে ‘চুরি করা’ শেখানোর দায় চাপালেন ‘গদ্দার’-এর উপর! মহিষাদলে দলীয় প্রার্থী তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে সভা থেকে মমতার স্পষ্ট অভিযোগ, ‘বলে বেড়াচ্ছে তৃণমূল নাকি চোর। আরে তৃণমূলকে চুরি তোর থেকে শিখেছে। তৃণমূল চুরি করতে জানে না, তৃণমূল চুরি করেনি। তোর মতো কয়েকজন অপদার্থ লোক কাজ সেরে বিজেপিতে চলে গিয়েছে বাঁচতে। আর দোষ দিয়ে গিয়েছে তৃণমূলকে।’

এদিন মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সমর্থনে দাঁতনে জনসভা করেছেন নেত্রী। এর পর তিনি তমলুকে দেবাংশু ভট্টাচার্যর হয়ে মহিষাদলে নির্বাচনী প্রচার করেন। চব্বিশের লোকসভা ভোটে মেদিনীপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে জোড়া জনসভা থেকে আগাগোড়া নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করলেন তিনি। বারবার তাঁর বক্তব্যে উঠে এল ‘গদ্দার’ শধবন্ধ। অতীত তুলে ধরে শুভেন্দুর কীর্তিকলাপের কথা শোনালেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার প্রচারে মেদিনীপুরের দাঁতনে একটি জনসভায় যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়েই তিনি বলেন, ‘আপনারা কেন আগের প্রার্থীকে না দিয়ে অন্য একজনকে নিয়ে এলেন? এখান থেকে সাংসদকে সরালেন কেন?’ মমতার দাবি, বিদায়ী সাংসদকে আবারও টিকিট দিয়ে দেখা উচিত ছিল, তাঁকে মানুষ গ্রহণ করছেন কি না। নাম না করে দিলীপ ঘোষ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘তাঁর গুণগান আমি করতে চাই না, কারণ আমি ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চাই না। নাহলে প্রশ্ন তুলতে পারতাম।’

উল্লেখ্য, জুন মালিয়ার বিরুদ্ধে এবার মেদিনীপুরে প্রার্থী হয়েছেন অগ্নিমিত্রা পল। অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষকে প্রার্থী করা হয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে। মমতা এদিন দাবি করেন, বিধায়ক হিসেবে ইতিমধ্যেই অনেক কাজ করে দিয়েছেন জুন মালিয়া। এবার সাংসদ হলে বাকি কাজ করে দেবেন।

মমতার বক্তব্যে উঠে আসে নন্দীগ্রাম আন্দোলন প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় ১০ দিন ছিল না পিতা-পুত্র, বাইরেই বেরয়নি। আমি আমার বইতে তবু ওঁদের কথা লিখেছিলাম। কারণ, তখন দলের লোক ছিল। তাঁদের প্রতি সম্মান জানিয়ে নাম উল্লেখ করেছিলাম। এখন বই লিখলে অন্যভাবে লিখতাম।’ এ প্রসঙ্গে এক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাও শোনালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘সেবার বাবা শপথ নিতে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পদে। বাংলা থেকে ৫,৬ জন সেবার মন্ত্রী হয়েছিলেন। দেখলাম, বাবার শপথে ছেলে নেই। কেন? খোঁজখবর নিয়ে শুনলাম, বাবা কেন মন্ত্রী হচ্ছে, উনি কেন হচ্ছেন না, তাই গোঁসা হয়েছে। বাবার শপথে যায়নি। আর এখন নিজেকে মনে করছে যেন প্রেসিডেন্ট, ক্ষমতা দেখাচ্ছে। এক পকেটে বোমা, আরেক পকেটে ইডি-সিবিআই। ২৬ হাজার চাকরি খেল। এটা কি গর্বের? আমি বলে রাখছি, এই চাকরিপ্রার্থীদের কারও যদি কিছু হয়, তোমার বাড়ির সামনে তারা আসবে বিচার চাইতে।’

অন্যদিকে, পুরুলিয়ার বলরামপুরের জনসভা থেকে পালটা শুভেন্দু অধিকারীও তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন। কয়লা, বালি, চাকরি সব তৃণমূল চুরি করেছে বলেছে অভিযোগ বিরোধী দলনেতার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 3 =