উত্তরবঙ্গ সফর সেরে দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, দিন দশেক পরে দিল্লি সফর করবেন তিনি। এবারে রাজধানীতে মূলত তাঁর দুটি লক্ষ্য রয়েছে। ইন্ডিয়ার জোটের বৈঠকে যোগ দেবেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি রাজ্যের বকেয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা তাঁর।
নবান্ন সূত্রে খবর, আগামী ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি যাবেন তিনি। ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতে থাকবেন তিনি। জোটের বৈঠকে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি শরিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তাঁর আলাদা করে বৈঠক করার কথা। ১৮, ১৯ এবং ২০ ডিসেম্বর একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। ২১ তারিখ কলকাতায় ফিরতে পারেন তিনি।
রাজ্যের ‘বকেয়া’র দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন তিনি। শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দরের সামনে দাঁড়িয়ে এমনটাই জানালেন মমতা। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে দিল্লি গিয়েছিলেন। আগামী ১৭ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র চতুর্থ বৈঠক হওয়ার কথা দিল্লিতে। তাতে আমন্ত্রিত তৃণমূল নেত্রী। তবে জোটের বৈঠকের মধ্যে মমতা ১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোনও এক দিন প্রধানমন্ত্রীর সময় চেয়েছেন। মমতার কথায়, ‘সময় দিলে ভাল। না হলে আমাদের যা করার করব।’
এর আগে অক্টোবর মাসে রাজ্যের ‘বকেয়া’র দাবিতে দিল্লিযাত্রা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে চান। গত ৪ অক্টোবর রাতে তুলকালাম কাণ্ড দেখা দিয়েছিল কৃষি ভবনে। তৃণমূলের অবস্থানে হাজির হয় দিল্লি পুলিশ। একে একে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয় অভিষেক, শান্তনু সেন, বিরবাহা হাঁসদা এবং মহুয়া মৈত্রদের। যার প্রেক্ষিতে সে দিন মুখ্যমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘আজ গণতন্ত্রের জন্য একটি অন্ধকার এবং ভয়ঙ্কর দিন।’
শনিবার বাগডোগরায় মমতা অভিযোগ করেন, ‘একমাত্র বাংলার সব প্রাপ্য টাকাই বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও আমরা কিন্তু কোনও স্কিম (প্রকল্প) বন্ধ করিনি। সেই স্কিমগুলোর টাকা যাতে আমরা পাই, তার জন্য আমি ১৮, ১৯, ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে ডেট (সময়) চেয়েছি। যদি ডেট দেয় তো ভাল। না হলে আমি (এমনিতেই) ১৭ ডিসেম্বর দিল্লি যাচ্ছি।’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১০০ দিনের কাজের ‘বকেয়া’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে তাঁকে চিঠি লিখেছেন আগেই। জানিয়েছেন, রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রীকে নিয়ে তিনি তাঁর সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা করতে চান। মমতা বলেন, ‘১০০ দিনের কাজের বকেয়ার টাকা দেয়নি কেন্দ্র। আমাদের টাকা আটকে রয়েছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও আমাদের শেয়ার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলার বাড়ি প্রকল্পের যে ভাগের টাকা পাই, সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। গ্রামীণ রাস্তা তৈরির টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যে টাকা পাওয়ার কথা সেটা দেওয়া হচ্ছে না। এটা আমাদের প্রাপ্য টাকা।’
উল্লেখ্য, এর আগে তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ বলেছেন, ‘বকেয়া’ সংক্রান্ত কথাবার্তা যেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বলে নেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার কেন্দ্রের উদ্দেশে মমতার প্রশ্ন, ‘সব রাজ্য যদি ওই টাকা পায়, তবে আমাদের রাজ্য কেন পাবে না? এই জন্যই আমরা সময় চেয়েছি। যদি সময় দেন তো ভাল। না হলে আমরা তো অবশ্যই যাচ্ছি (দিল্লি)।’