এক শিশুকে অপহরণ করে মোটা টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় সব ভেস্তে গেল। অভিযোগ দায়ের হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দিল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট-১ নম্বর ব্লকের উস্তি থানা এলাকায়। এই অপহরণের ঘটনায় ক্যানিং এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা ও এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের এই ভূমিকায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত শিশুর পরিবার। জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম ইয়াসিন আখন (৬) উস্তি থানার সংগ্রামপুরের তালা গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার টিউশন পড়তে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ মেলেনি তার। রাত হতেই চিন্তায় পড়ে যান পরিবারের সদস্যরা। খোঁজখবর নেওয়া হয় অনেক জায়গাতেই। কিন্তু হদিশ মেলেনি শিশুর। বৃহস্পতিবার সকালে উস্তি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে মুক্তিপণ চেয়ে শিশুর বাবা হান্নান আখনের কাছে ফোনও আসে। মুক্তিপণ হিসেবে ৭ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। ইয়াসিনকে যে অপহরণ করা হয়েছে তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় পরিবার। সেই ঘটনার কথাও জানানো হয় পুলিশকে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই শিশুকে উদ্ধার করতে অভিযানে নেমে পড়ে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ। ডায়মন্ড হারবারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) পলাশ কুমার ঢালি এবং এসডিপিও মিতুন দে’র নেতৃত্বে একটি তদন্তকারী টিম গঠিত হয়। যে নম্বর থেকে মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করা হয়েছিল, সেটি ট্র্যাক করে ক্যানিং পৌঁছন তদন্তকারী আধিকারিকরা। শুক্রবার গভীর রাতে উদ্ধার করা হয় ওই শিশুকে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা প্রত্যেকেই শিশু পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, শিশুর পরিচিত কোনও ব্যক্তি কিংবা আত্মীয় এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও মিতুন দে জানিয়েছেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অপহৃত শিশুকে অক্ষত অবস্থায় বাবা মায়ের কাছে ফেরাতে পেরেছি। এটাই আমাদের কাছে বড় পাওয়া। এখনও পর্যন্ত দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এদিকে ছেলেকে ফিরে পেয়ে ভীষণ খুশি পরিবারের সদস্যরা। শিশুর বাবা হান্নান আখন জানিয়েছেন, ‘পুলিশ যেভাবে আমার ছেলেকে পাচারকারীদের খপ্পর থেকে উদ্ধার করেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তাঁদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।’