যৌন হেনস্তার অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল, যাদবপুরে স্থগিত পরীক্ষা

অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগে ফের উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। যদিও সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেই দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা বড় অংশ। যাদবপুরের শিক্ষক সংগঠন ‘জুটা’র তরফে বলা হয়েছিল, ওই ছাত্রী সত্যি কথা বলছেন না। আসলে তিনি নিজেই নকল করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন।
এবার এই আবহেই অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হল পরীক্ষা! সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয় পরীক্ষা। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপন বিভাগের স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের বাকি পরীক্ষা বিশেষ কারণে স্থগিত করা হচ্ছে। কবে থেকে ফের পরীক্ষা, সে বিষয়েও কিছু জানানো হয়নি ওই বিজ্ঞপ্তিতে। প্রসঙ্গত, ওই বিভাগের এক ছাত্রীই অভিযোগ তুলেছেন।
অভিযোগ পরীক্ষা চলাকালীন ওই ছাত্রীকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে অভব্য আচরণ করা হয়েছে । ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার লিখিত অভিযোগ করেছিলেন এক ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে একটি ইমেল করেছিলেন ওই ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে লেখা ওই ইমেল ছাত্রী পাঠিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন শীর্ষ পদাধিকারী-সহ রাজ্য মহিলা কমিশন এবং যাদবপুর থানাতেও। তাতে তিনি জানিয়েছিলেন, অভিযুক্ত অধ্যাপক তাঁর উপর পরীক্ষার খাতায় নকল করার ‘মিথ্যা দায়’ চাপিয়ে পরীক্ষার হলে সমস্ত সহপাঠীর সামনে শারীরিক তল্লাশি দিতে বাধ্য করেছেন। পরের পরীক্ষার দিন তাঁকে হল থেকে নিজের ঘরে ডেকে পাঠিয়ে শারীরিক নির্যাতনও করেন ওই অধ্যাপক।
এ নিয়ে ফের তোলপাড় বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযুক্ত অধ্যাপক বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম পরিচিত মুখ। আর এই কারণেই ওই অধ্যাপককে ফাঁসানোর চক্রান্ত হয়েছে বলেও দাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটা-র পক্ষ থেকেও এই ঘটনায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার’ কথা বলা হয়েছে। ওই অধ্যাপক যে বিভাগে পড়ান, সেই বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, ‘অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে উঠছে একাজ তিনি করতে পারেন বলে বিশ্বাস করি না!’ ‘স্যরকে ফাঁসানো হচ্ছে’ বলেও সরব ওই পড়ুয়ারা। যদিও বিভাগের প্রধান অধ্যাপক পার্থসারথি চক্রবর্তী পরীক্ষা স্থগিতের খবর নিশ্চিত করলেও আপাতত সাম্প্রতিক ওই অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − sixteen =