মালদ্বীপের কাছাকাছি “কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ” স্থানে বাহিনী আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিল ভারতীয় নৌবাহিনী। সিদ্ধান্ত হয়েছে মালে, ভারতীয় বাহিনীকে স্বদেশে পাঠানো শুরু করার কয়েকদিন আগে সেখানে নতুন ঘাঁটি খোলা হবে৷ মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুর মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন। ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতকে মলদ্বীপ থেকে সেনা সরাতে বলা হয়েছে।এদিকে, সূত্রের খবর, সেখানে নানাভাবে চিনের নজরদারি বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন ঘাঁটি খোলার সিদ্ধান্ত নৌবাহিনীর।
চীনপন্থী মহম্মদ মইজু মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ভারত ও সে দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে৷ ২০১০ সাল থেকে একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে প্রায় ১০০ জন ভারতীয় সেনা মলদ্বীপে রয়েছেন।ঘটনাচক্রে, চিন সফর থেকে ফিরেই মুইজ্জু মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর জন্য ১৫ মার্চের ‘চরম সময়সীমা’ ঘোষণা করেছেন।
দ্বীপপুঞ্জের দেশটিতে চীনের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে ভারতের মনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। সেদেশে চিনের গতিবিধি নিয়েও সন্দিহান ভারত। নতুন ঘাঁটিটি এই অঞ্চলে নয়াদিল্লির “অপারেশনাল নজরদারি” প্রসারিত করবে বলেই নৌ বাহিনীর বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
নৌবাহিনীর বিবৃতি অনুসারে, ভারতের লাক্ষাদ্বীপে ৬ মার্চ খোলা নতুন ঘাঁটি, একটি ছোট দলকে একটি “স্বাধীন নৌ ইউনিটে” পরিণত করবে৷ভারতের নৌবাহিনীর লাক্ষাদ্বীপের কাভারাত্তিতে একটি ঘাঁটি রয়েছে, তবে নতুন ঘাঁটিটি মালদ্বীপের প্রায় ২৫৮ কিলোমিটার দূরে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ নামে চিনা জাহাজ মালদ্বীপে ঘাঁটি গেড়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছে।এই বিষয়টিকে মোটেই ভালোভাবে নেয়নি ভারত। নয়াদিল্লি গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছিল। যদিও শিয়াং ইয়াং হং ৩-কে গুপ্তচর জাহাজ বলে মানতে অস্বীকার করেছে চিন। বেজিংয়ের দাবি, নেহাতই ‘নাবিক পরিবর্তন এবং নিজেদের ভাণ্ডার পুনরায় ভরতি করার’ জন্য মালেতে নোঙর করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। ঠিক একইসুরে চিনা জাহাজকে মালেতে নোঙরের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছিল মলদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রক। সেইসঙ্গে চিনের ‘বন্ধু’ মহম্মদ মুইজ্জু সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে তাদের দেশের জলসীমায় কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে না চিনা জাহাজ। ‘বন্ধু’ হওয়ায় চিনা জাহাজকে ‘নাবিক পরিবর্তন এবং নিজেদের ভাণ্ডার পুনরায় ভরতি করার’ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।তবে এই আশ্বাসবাণীতে চিঁড়ে ভেজেনি।
বরং ভারতীয় নৌবাহনী সূত্রে খবর মিলেছিল যে চিনের জাহাজকে একেবারে চোখে-চোখে রাখা হচ্ছে, যাতে মলদ্বীপের জলসীমায় কোনও গবেষণামূলক কাজ চালাতে না পারে। যে গবেষণা চিন সামরিক কারণেই চালিয়েই থাকে বলেই বারবার অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্কের অভিযোগ, চিনের এরকম ‘গুপ্তচর জাহাজ’ আছে। যা সমুদ্রের তলা থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। ভারত মহাসাগর থেকেও সংগ্রহ করে।