আজও বাঙিটোলার বিখ্যাত ছানার মন্ডার চাহিদা সারা রাজ্যে জুড়ে খ্যাত

প্রায় ১০০ বছরের পুরনো কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলার বিখ্যাত ছানার মন্ডার চাহিদা আজও রয়েছে। শুধু ছানা আর চিনির একটা আনুপাতিক মিশ্রণ। সঙ্গে পরিমাণ মতো ক্ষীর আর সামান্য এলাচগুঁড়ো। তার সঙ্গেও যদি কিছু মেশাতে হয়, তা হল ভক্তি, নিষ্ঠা আর সংস্কার। মালদার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মিষ্টি বাঙিটোলার মন্ডা জেলাবাসীর কাছে খুবই জনপ্রিয়। এই মিষ্টি শক্ত নয় বা এতে চিনির প্রাধান্য নেই। নেই ময়দার মিশ্রণও। স্বাদ অনেকটা কাঁচা সন্দেশের মতো-আর আর প্রতিবছরই চৈত্র মাসের বাঙিটোলা এলাকার মুক্তকেশী কালী পূজো উপলক্ষ্যে এই মিষ্টি চাহিদা বাড়ে।

কালিয়াচক-২  ব্লকের অন্তর্গত গঙ্গা তীরবর্তী প্রাচীন মৈথিল গ্রাম বাঙিটোলা। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী মুক্তকেশী মন্দির সংলগ্ন দোকানগুলোতে এখনও পাওয়া যায় এই মিষ্টি। তবে কতদিন পাওয়া যাবে তা বলতে পারেন না বিক্রেতারা। কেননা নতুন প্রজন্ম মজেছে রকমারি আইটেম মিষ্টিতে। চাহিদা হারাচ্ছে প্রাচীন এই ছানার মন্ডার।

এই গ্রামের বাসিন্দারা, প্রায় ৭০-৮০ বছর আগে এখানকার বাসিন্দা ইন্দুভূষণ ঝা এই মিষ্টি বানানো আরম্ভ করেন। এটি মূলত পুজোকেন্দ্রিক মিষ্টি। অর্থাৎ সারাবছর বানানো হলেও পূজা-পার্বনে এই মিষ্টির চাহিদা বেশি। সত্তরের বছরের ষষ্ঠীচরণ সাহা বর্তমানে একমাত্র কারিগর। তিনি এখন একা হাতে তৈরি করে চলেছেন মন্ডা।  যদি ষষ্ঠীচরণবাবুর ছেলে উত্তম সাহা পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখার প্রচেষ্টা রয়েছেন। তিনি এখন বাবার কাছে মন্ডা তৈরি পাঠ নিচ্ছেন। দোকানের অন্যান্য কারিগরদের মন্ডা তৈরি শেখানোর চেষ্টা করছেন। তবে ষষ্ঠীচরণবাবুর মতো মন্ডা তৈরি এখনো হচ্ছে না তাদের হাত ধরে। অপরদিকে এলাকায় একটিমাত্র দোকানেই পাওয়া যায় তাই এলাকার মানুষের মধ্যে চাহিদাও রয়েছে। তাই বাঙিটোলার এই মন্ডাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উত্তমবাবু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =