যুবভারতীতে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডকে ৫-০ ব্যবধানে হারাল ইস্টবেঙ্গল

এই ইস্টবেঙ্গলকেই দেখার অপেক্ষায় ছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা! প্রথমার্ধে দুই, দ্বিতীয়ার্ধে আরও তিন। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডকে ৫-০ ব্যবধানে হারাল ইস্টবেঙ্গল। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ইতিহাসে এটিই ইস্টবেঙ্গলের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। হারের হ্যাটট্রিক এবং ড্রয়ের পর অবশেষে স্বাদ-বদল। গ্যালারিতে ইস্টবেঙ্গল…ইস্টবেঙ্গল ধ্বনি। গ্যালারির মতোও মাঠের পারফরম্যান্সেও ছন্দ দেখাল ইস্টবেঙ্গল। পাঁচতারা পারফরম্যান্সে উৎসব লাল-হলুদে।

আইএসএলের ইতিহাসে কোনও অ্যাওয়ে ম্যাচ জেতেনি নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড! সেই পরিসংখ্যান বদলাতে দিল না ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ১৪ মিনিটে প্রথম গোল বোরহার সৌজন্যে। ১০ মিনিটের মধ্যেই স্কোর লাইন ২-০ করেন ক্যাপ্টেন ক্লেটন সিলভা। দ্বিতীয় গোলটির কথা আলাদা করে বলতে হয়। মন্দার রাও দেশাইয়ের দুর্দান্ত ক্রস। সেই ক্রসে গোল করতে না পারাটাই যেন কঠিন হত ক্লেটনের জন্য। অধিনায়ক সুযোগ নষ্ট করেননি।

ম্যাচের শুরুতেই ২ গোলের লিড! ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরাও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। আলোচনা শুরু হয়ে যায়, এই কম্বিনেশনই কি সেরা? কিন্তু আশঙ্কাও ছিল। এ মরসুমে বেশ কিছু ম্যাচেই লিড নিয়ে খেই হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তাই যেন শেষ বাঁশি না বাজা অবধি ভরসা নেই। তবে ঘরের মাঠের সমর্থকদের উপস্থিতি যেন বাড়তি তাগিদ দিল লাল-হলুদ শিবিরকে। প্রতিটি প্লেয়ারের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস নজরে পড়েছে। আর গ্যালারির উচ্ছ্বাস! সে আর লিখে বোঝানো সম্ভব নয়।

গত ম্যাচেই ইস্টবেঙ্গল সিনিয়র টিমে অভিষেক হয়েছে বিষ্ণুর। সিনিয়র টিমের হয়ে ঘরের মাঠে খেলার সুযোগ। পারফরম্যান্সে সবটাই নিংড়ে দিচ্ছিলেন এই তরুণ ফুটবলার। গোলের সুযোগ পেলেও অল্পের জন্য সাফল্য আসেনি। বিরতিতে তরুণ ফুটবলার বিষ্ণুর পরিবর্তে নন্দকুমার সেকারকে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। প্রথম টাচেই গোলের সুযোগ। শট টার্গেটে থাকলেও তা সেভ করেন নর্থ ইস্ট গোলরক্ষক।

তৃতীয় গোল এল তাঁর সৌজন্যেই। ৬২ মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করেন নন্দকুমার। উইঙ্গার থেকে উইঙ্গার। নাওরেম মহেশের বল নিয়ে দৌড়, সঠিক সময়ে আনমার্কড নন্দকুমারের দিকে ক্রস। গোল মিস করেননি নন্দকুমার। ডুরান্ড ডার্বিতে গোল করেছিলেন নন্দকুমার। আইএসএলে লাল হলুদ জার্সিতে নন্দকুমারের প্রথম গোল এল যুবভারতীতেই। চার মিনিটের মধ্যেই ক্যাপ্টেনের আরও একটি গোল। কিছুক্ষণ আগে গোল করা নন্দকুমার এ বার অ্যাসিস্ট। তাঁর পাসে বক্সের মধ্যে জোরালো শট ক্যাপ্টেন ক্লেটন সিলভার। সেখানেই ইতি নয়। নন্দকুমারের গোলে স্কোর লাইন ৫-০ হতেই আনন্দে লাফিয়ে উঠলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতও। পাঁচ গোলের পর সেলিব্রশনে মাততে দেখা গেল তাঁকে। যেন নিজেকেই বলছিলেন, এই টিমকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা যায়!

শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ পেয়েছিল নর্থ ইস্ট। যদিও সেই সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারেনি। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সেও যেন স্বস্তি। ক্লিনশিট রেখেই জিততে পারল লাল-হলুদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − seventeen =