মধ্যরাতে আগুন কলকাতার লেক অ্যাভিনিউয়ের একটি বাড়িতে। আর সেই আগুন নেভাতে গিয়ে রাস্তার দুপাশে পার্ক করে গাড়ির জেরে চরম সমস্যায় পড়ল দমকল। ফের একবার, বেআইনি পার্কিং যে ক্ষেত্র বিশেষ কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে তা প্রমাণ হল।
সোমবার গভীর রাতে আগুন লেগেছিল দক্ষিণ কলকাতার একটি তেতলা বাড়ির নীচে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই রাতে লেক অ্যাভিনিউয়ের একটি তেতলা বাড়ির নীচের তলা থেকে ধোঁয়া বার হতে দেখা যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। দমকলের দাবি, দেখা যায়, ৪৮ নম্বর সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের ঘটনাস্থল আসলে একটি বাড়ির গ্যারাজ। কিন্তু সেখানে তুলো রাখা। তাতেই আগুন ধরে প্রথমে। পরে তা পাশের রেস্তরাঁয় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তার চেয়েও সমস্যা তৈরি হয় রাস্তার দু’ধারে পর পর গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায়। বেআইনি পার্কিং-এর জেরে আগুন নেভাতে দমকলের ইঞ্জিন কীভাবে ঢুকবে, তা নিয়ে ঝঞ্ঝাট শুরু হয়।শেষ পর্যন্ত বেআইনি পার্কিং সরিয়ে দু’ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। তবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি।
এদিকে, আতঙ্কে রাস্তায় নেমে আসেন বাড়ির বাসিন্দারা। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে আগুন লাগার স্থলে তুলোর গুদাম এদিকে ঘটনাস্থলের আশপাশে সার দিয়ে রাখা ট্যাক্সির জেরে দমকলের গাড়ি প্রথমে ঢুকতেই পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই এলাকায় রাতের বেআইনি পার্কিং বন্ধ করা যায়নি। পুলিশ এবং পুরসভার তরফে যদিও এ নিয়ে স্পষ্ট করে কোনও উত্তর মেলেনি। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘এমন অবস্থা হয় যে, দমকল আগুন নেভানোর কাজ শুরুই করতে পারছিল না। এই এলাকায় বাড়ির সামনে স্থানীয়েরা কিছু গাড়ি রাখেন। কিন্তু বাইরের অনেকে এখানে ট্যাক্সি রেখে চলে যান।’ স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস বসুর অভিযোগ, ‘বসতবাড়ির নীচে এই ভাবে তুলো রেখে ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হয় কী করে? এর জেরে তো যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘটে যেতে পারে।’ ওই বাড়ির মালিকের তরফে যদিও মন্তব্য করা হয়নি।
কিন্তু রাতে এমন বেআইনি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিছু দিন আগে মোবাইল অ্যাপের ঘোষণা করেছিল পুরসভা। বলা হয়েছিল, রাস্তায় ঘুরে পুরকর্মীরা যদি দেখেন বেআইনি পার্কিং করা রয়েছে, তা হলে ওই অ্যাপের মাধ্যমেই জরিমানার বার্তা পাঠানো হবে গাড়ির মালিকের নম্বরে। জরিমানা দ্রুত না মেটালে সমস্যায় পড়তে হবে। কিন্তু সেই অ্যাপ আজও চালু হয়নি। এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘দ্রুত কাজ হবে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে।’