২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে গিয়েছিল ভারত। তার পরের দিনই পদত্যাগ করেন ভারতীয় দলের তৎকালীন হেড কোচ অনিল কুম্বলে। পাকিস্তানের কাছে হতশ্রী হারের জন্য যে কুম্বলে পদত্যাগ করেছিলেন তা নয়। সেই সময়ের অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল। কোচ ও অধিনায়কের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির জন্যই কুম্বলে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। সেই ঘটনা নিয়ে নিজের বই ‘নট জাস্ট আ নাইটওয়াচম্যান’-এ লিখেছেন প্রাক্তন কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেল বিনোদ রাই।
ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলানোর জন্য সুপ্রিম কোর্ট চার সদস্যের একটি প্যানেল তৈরি করেছিল। সেই প্যানেলের সদস্য ছিলেন বিনোদ রাই। তাঁর সময়ে কোহলি ও কুম্বলের মধ্যে সংঘাত মারাত্মক আকার নিয়েছিল। বিনোদ রাই কথা বলেছিলেন কোহলি ও কুম্বলের সঙ্গে। কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতা বইয়ে লিপিবদ্ধ করেছেন বিনোদ রাই।
কোহলি ও কুম্বলের অধ্যায় নিয়ে বিনোদ রাই তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ”ক্যাপ্টেন ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথাবার্তার পরে জানতে পেরেছিলাম কুম্বলে অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ ছিল। শৃঙ্খলার উপরে খুব জোর দিত। সেই কারণে দলের সদস্যরা কুম্বলের উপরে সন্তুষ্ট ছিল না। আমি বিরাট কোহলির সঙ্গেও এই বিষয়ে কথা বলেছিলাম। কোহলি বলেছিল, দলের তরুণ সদস্যরা কুম্বলেকে ভয় পেত।” কুম্বলে যেভাবে কাজ করতেন তাতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে থাকতেন দলের তরুণ সদস্যরা। কোহলি এমনটাই জানিয়েছিলেন বিনোদ রাইকে।
কোচ ও অধিনায়কের মধ্যে ঝামেলার শুরু অনেক আগে থেকেই। যা চূড়ায় পৌঁছেছিল ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময়ে। ভারত-পাক ফাইনালের পরে ভারতীয় ক্যাম্প ছেড়ে চলে আসেন কুম্বলে। তাঁর সঙ্গেও কথা বলেছিলেন বিনোদ রাই। কুম্বলের বক্তব্যও রাই তুলে ধরেছেন তাঁর বইয়ে। বিনোদ রাই লিখেছেন, ”লন্ডন থেকে ফেরার পরে কুম্বলের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছিলাম। যেভাবে গোটা ঘটনা হয়েছিল, তাতে অত্যন্ত হতাশ হয়েছিল কুম্বলে। কুম্বলের মনে হয়েছিল ওর সঙ্গে ঠিক ব্যবহার করা হয়নি, অধিনায়ক ও দলকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত হয়নি। কুম্বলের মতে, একটা দলকে শৃঙ্খলাপরায়ণ ও পেশাদার হিসাবে গড়ে তোলা একজন কোচেরই কাজ। কুম্বলে বলেছিল, সিনিয়র হিসেবে ওকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত ছিল প্লেয়ারদের।” কোচ ও অধিনায়কের মধ্যে সেই বিতর্কিত ঘটনা বইয়ে প্রকাশিত হওয়ায় নতুন করে শোরগোল তৈরি হয়েছে দেশের ক্রিকেটমহলে। বিনোদ রাইয়ের বই নতুন করে পাঠকদের সামনে তুলে ধরবে সেই সময়ের ঘটনা। জানা যাবে অনেক অজানা তথ্য।