কেতুগ্রাম: পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের নিখোঁজ হওয়া নাবালিকার দেহ উদ্ধার হল ৭২ ঘণ্টা পর। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে নাবালিকাকে। অভিযুক্তর বাড়ির সামনে, গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ। ঘটনায় আটক দুই। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের থানার সুলতানপুরের। তদন্তে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। বাবা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মায়ের সঙ্গে মামাবাড়িতে আশ্রয় নেয় মেয়েটি। মামারাও গরিব। তাই পেট চালাতে মায়ের পাশাপাশি ১০ বছরের মেয়েটিও পরিচারিকার কাজ করত। কয়েকদিন ধরে গৃহস্থবাড়িতেই থাকতে হচ্ছিল মেয়েটিকে। ফোনে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ হত। কিন্তু গত সোমবার থেকে হঠাৎ ওই বাড়ি থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায় মেয়েটি। কিছুতেই তার হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষে মনিবের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে চিলেকোঠার ঘর থেকে দশ বছরের নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়াই।
পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার সুলতানপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হল ওই নাবালিকার দেহ। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুনের পর চিলেকোঠার ঘরে মৃতদেহ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। সুযোগ বুঝে কোথাও পাচার করে দেওয়া হত। দেহ উদ্ধারের পরেই গ্রামবাসীরা ওই বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এই ঘটনায় পুলিশ পিয়েল শেখ নামে এক যুবক এবং তার মা রুবি বিবিকে আটক করেছে। বছরখানেক আগে থেকেই নাবালিকা তার মায়ের মতো পরিচারিকার কাজ শুরু করে। সুলতানপুর গ্রামে জালাল শেখ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে নাবালিকাকে কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। জালাল শেখের বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী ও দুই ছেলে। তার মধ্যে বড় ছেলে জুয়েল বিবাহিত। ছোট ছেলে পিয়েল (২৪) অবিবাহিত। নাবালিকার এক আত্মীয় জানান, আগে সুলতানপুর যাতায়াত করত। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে রুবি বিবি ওকে বাড়িতে আসতে দিত না। ওদের বাড়িতেই থাকতে হত। গত শুক্রবার মেয়েটি রাইখাঁ গ্রামে আসার পর ওকে আবার নিয়ে চলে যায়। এর পর সোমবার থেকে হদিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। জালাল শেখের বাড়িতে বারবার জিজ্ঞাসা করলেও ওরা বলছিল, মেয়েটি তো বাড়ি চলে গিয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার মুখে রাইখাঁ গ্রাম থেকে বেশকিছু লোকজন জালাল শেখের বাড়িতে যান। তারা জালাল ও রুবি বিবিকে চেপে ধরেন। চেপে ধরা হয় ছোট ছেলে পিয়েল শেখকে। তখন পিয়েল স্বীকার করে মেয়েটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে চিলেকোঠার ঘরে দেহটি রাখা আছে। পরে নাবালিকার নিথর দেহ উদ্ধার করে। এরপর পিয়েল শেখ ও রুবি বিবিকে আটক করে ফেলেন গ্রামবাসীরা। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
যদিও কাটোয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তদন্ত চলছে। ঘটনায় এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।