রাজীব মুখোপাধ্যায়, হাওড়া
হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষের কাছে ‘রামনবমী’ অন্যতম পুণ্যের দিন। এই দিন পালন করা হয় সারা দেশ জুড়ে। এই বছর হাওড়াতে মহাধুমধাম করে রামনবমীর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এবারে রামনবমীর শোভাযাত্রায় হাজারো শ্রদ্ধালু মানুষ অংশগ্রহণ করবেন বলে দাবি সংগঠকদের। তাঁরা জানান, শোভাযাত্রায় থাকবে ট্যাবলো। ট্যাবলোটি শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে। থাকবে ৮ ফুট উঁচু ঠাকুর শ্রী রামচন্দ্রের মূর্তি ও ৭ ফুট উঁচু হনুমানের মূর্তি। ১০ এপ্রিল রবিবার রামনবমীর পুণ্যদিনে একটি বিশাল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
হাওড়ার শিবপুর থানার অন্তর্গত অবনী মল-এর কাছ থেকে হাওড়া থানা অন্তর্গত হাওড়া ময়দান পর্যন্ত এই বিরাট মিছিল শোভাযাত্রা সহ বের করা হবে বলে জানালেন অঞ্জনিপূত্র সেনার ফাউন্ডার মেম্বার সুরেন্দ্র ভর্মা। তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা পশ্চিম বাংলার বুকে অঞ্জনিপুত্র সেনার তরফ থেকে প্রথম রামনবমীর শোভাযাত্রা বের করেন। এখন গোটা পশ্চিমবাংলার বহু জায়গায় রামনবমীর মিছিল বের করা হয়। তবে, সবচেয়ে পুরনো ও বিশাল মিছিল বের করার রেকর্ড আজও রয়েছে হাওড়ার অঞ্জনিপুত্র সেনার। বিগত দু’বছর করোনাকালে রামনবমীর মিছিল বের করা হয়নি, শুধুমাত্র পূজা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করা হয়েছিল। এবছর রাজ্যে করোনার বিধিনিষেধ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই এবার দু’বছরের খামতি পূরণ করতে চলেছে অঞ্জনিপুত্র সেনা। তারা এই বছর বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলোর মাধ্যমে হাওড়া শহরবাসীকে দেখাতে চাইছেন সনাতনী ধর্মের ঐতিহ্য। অযোধ্যার রাম জন্মভূমি মন্দিরের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে সেই মন্দিরের প্রতিকৃতি।
যা আকারে ও আয়তনে ১৮ থেকে ২০ ফুট বাই ১৫ ফুট ও উচ্চতা প্রায় ১০ ফুট হবে। রাম মন্দিরের স্ট্রাকচার তৈরি করার কাজ ইতিমধ্যে চলছে জোড় কদমে। প্রায় ৩৫ জন শ্রমিক মন্দির নির্মাণের কাজে হাত লাগিয়েছেন বলে জানান তিনি। সঠিক সময়ের মধ্যে মন্দির তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করা যায় তার চেষ্টা করছেন শ্রমিকরা। ৯ তারিখ শনিবার রাতে মন্দিরের তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করে তাদের হাতে দিয়ে দেবে শ্রমিকরা বলে জানান তিনি। এর পাশাপাশি এইবার ৮ ফুট মাটির ঠাকুর শ্রী রামচন্দ্রের মূর্তি ও ৭ ফুটের হনুমানের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে, সেটাও থাকবে মিছিলে। তিনি জানান, বিগত কয়েক বছর প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন।
এইবছর সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। মিছিলে মূল জমায়েত করেন হাওড়া শহর এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সনাতন ধর্মে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষেরা। তবে, মিছিলে যোগ দিতে কাউকে আলাদা করে কোনরকম আমন্ত্রণ জানানো হয় না। শুধু সংস্থার পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন স্থানে ব্যানার পোস্টার লাগিয়ে প্রচার চালানো হয়। প্রতিবারই রামনবমীর আগে থেকে প্রচার চালানো হয়, এরফলে বিপুল সংখ্যায় মানুষ মিছিলে যোগ দিতে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে। পুলিশ প্রশাসনের অনুমতির নেওয়ার জন্য একমাস আগেই আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
তাদের অনুমান বিগত বছরগুলোর মতই এই বছরও তারা অনুমতি পাবেন। অঞ্জনিপুত্র সেনার তরফ থেকে এই বিরাট মিছিল ও শোভাযাত্রাতে বহু সংখ্যক মানুষ যোগ দেবেন। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পর থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে রামনবমীর উৎসব পালন করা হচ্ছে হাওড়া শহর ও গ্রামীণ এলাকাতে। পাঁচলাতে ধর্মীয় মিছিল ও প্রচুর সংখ্যায় জন সমাগম হয়। প্রাত্যহিক কয়েক হাজার মানুষের জন্য খিচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা করা হয়।