বসন্তে সেজে উঠেছে প্রকৃতি। তবে আবহাওয়া যতই ভাল হোক না কেন, ঋতু পরিবর্তনের সময়টাতে নানা ধরনের রোগ-জ্বালা লেগেই থাকে। তারই মধ্যে একটি চিকেন পক্স বা জল বসন্ত। এছাড়াও মিসলস বা হাম-সহ আরও নানা রোগ এই সময়টায় একটু বাড়ে।
চিকেন পক্স, হাম এই রোগগুলোর সঙ্গে আমরা পরিচিত। সেইসঙ্গে পরিচিত অনেক কুসংস্কারের সঙ্গেও। দিদা-ঠাকুমাদের অনেক নিয়ম এখনও মানা হয়। সেগুলো কিন্তু ঝেড়ে ফেলতে না পারলে, রোগীর সুস্থতার পথে বাধা হতে পারে।
চিকেন পক্স কী, উপসর্গ
ভাইরাস ঘটিত রোগ। এতে ২-৩ দিন জ্বর আসে। জ্বর নাও আসতে পারে। সারা শরীরে ব়্যাস বা বড় ফুসকুড়ির মতো বের হয়। চুলকায়।শরীর দুর্বল হয়ে যায়। রোগটি ছোঁয়াচে। আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে রোগ ছড়ায়।পাশাপাশি বসন্তকালে এই রোগের প্রবণতা বেশি থাকলেও, সারা বছরই হতে পারে।
ভুল ধারণা
১. অনেকেই মনে করেন চিকেন পক্স-এর জন্য চিকিত্সার দরকার নেই। অনেকের ধারণা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খাওয়া মানে, সেটা শরীরে পক্সের গুটি ছড়িয়ে পড়তে দেবে না। আর সেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ব়্যাশ বা গুটি সেভাবে শরীরে দেখা না দিলে আবার হবে। এই ধারণা একেবারেই ভুল।এই রোগ যাতে বাড়াহাড়ির পর্যায়ে না চলে যায় তাই ওষুধ দেওয়া হয়। অ্যান্টি বায়োটিক দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। তাছাড়া শরীরে গুটি শুকিয়ে যাওয়া তা থেকে সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সেজন্য এখন ভাল মলম বেরিয়ে গিয়েছে।
২. এই সময় খাওয়া নিয়ে ভীষণ ট্যাবু থাকে। বলা হয়, সাবু, বার্লি, নিরামিষ খেতে হবে।এটা একদম ঠিক নয়। এই সময় অবশ্যই সুষম সহজপাচ্য খাবার দিতে হবে রোগীকে। দ্রুত সেরে ওঠার জন্য প্রোটিন খুব জরুরি। তাই রোগীর পাতে অবশ্যই মাছের ঝোল, মাংসের স্টু, ডিম, দুধ রাখতে হবে। তবে তেল মশলাদার রান্না চলবে না।
৩. অনেকের ধারণা মশারি টাঙিয়ে রাখলে রোগ ছড়াবে না। এটা ভাইরাস ঘটিত রোগ। এতে মশার সঙ্গে সম্পর্ক নেই। তবে রোগীকে মশারির মধ্যে রাখতে পারেন। কারণ, রোগীকে মশা কামড়ালে তিনি চুলকে ফেলবেন। যেহেতু শরীরে ব়্যাশ থাকে, তাই চুলকে ফেললে, নখের ময়লায় সংক্রমণ হতে পারে।
৪. শুকনো খোসা থেকে রোগ ছড়ায়- চিকেন পক্স সারার সময় গুটি শুকিয়ে ছাল উঠতে থাকে। অনেকেরই ধারণা ওই ছালগুলো রোগের উত্স। কিন্তু তেমনটা নয়।বসন্ত কাঁচা অবস্থা থাকলেও রোগ ছড়াতে পারে।
৫. চিকেন পক্স মানে নখ কাটা যাবে না। এগুলোও কু সংস্কার।নখ এই সময় কাটা জরুরি। কারণ, ব়্যাশগুলি ভীষণ চুলকায়। তখন বড় নখ থাকলে, চুলকে ফেলেলই বিপত্তি।