‘বাংলা গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার’, ফের তোপ রাজ্যপালের

কলকাতা: ফের প্রকাশ্যে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত। আম্বেদকর জন্মজয়ন্তীতে বিধানসভার স্পিকারের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আরও একবার তোপ দাগলেন তিনি। যদিও রাজ্যপালের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেই পালটা দাবি বিধানসভার স্পিকারের।

বৃহস্পতিবার আম্বেদকর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। আম্বেদকরের (BR Ambedkar) মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি।

তারপর স্পিকারের পাশে দাঁড়িয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। রাজ্যপাল বলেন, ‘বাংলা গণতন্ত্রের গ্যাস চেম্বার। পুড়িয়েও মারা হচ্ছে। চাকরিও দেওয়া হচ্ছে। সিবিআই তদন্ত নিয়ে এত প্রশ্ন কেন? আমার কাছে রাজ্যের কোনও রিপোর্ট আসে না। অথচ মহিলাদের উপর অত্যাচার বাড়ছে। ভোট পরবর্তী হিংসায় প্রাণহানি পর্যন্ত হয়েছে। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কিছু মানুষ কী আইনের ঊর্ধ্বে? গতকাল হাই কোর্টে যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। বিচারের মন্দিরের মাথা হেঁট করা অনুচিত। রাজ্যের মানুষ ভয় নিয়ে বেঁচে আছেন। শাসন ব্যবস্থার সবসময় একটা নির্দিষ্ট দিকে চলা উচিত।’

বক্তব্য শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকরা রাজ্যপালকে একাধিক প্রশ্ন করেন। বিধানসভা সাংবাদিক বৈঠক করার জায়গা নয় বলে জানান স্পিকার। রাজ্যপাল যদিও স্পিকারের বাধায় কান দেননি। স্পিকারকে কার্যত অগ্রাহ্য করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও দেন। এরপর স্পিকারের কাঁধে হাত রেখে রাজ্যপাল বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। আমাদের উচিত সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করা।’ এরপর বিধানসভা চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল।

পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকের নিজস্ব গণ্ডি রয়েছে। সেই গণ্ডি অনুযায়ীই কাজ করা উচিত। রাজ্যপাল অনেক কথা বললেন। যা পুরোপুরি ঠিক না। আমরা সংবিধান মেনেই কাজ করি।’

রাজ্যপালের এহেন বিস্ফোরক আক্রমণের বিরোধিতায় সরব তৃণমূল। সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, সাংবিধানিক প্রধান হয়েও সংবিধানকে কলঙ্কিত করছেন রাজ্যপাল। দলদাসে পরিণত হয়েছেন তিনি। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য অবশ্য এ বিষয়ে তৃণমূলকে পালটা তোপ দেগেছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘পশ্চিমবঙ্গে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী থেকে সরকারি আমলা সকলেই ধারাবাহিকভাবে রাজ্যপালকে আক্রমণ করেন।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − four =