কুস্তি ফেডারেশনের নয়া কমিটিকে ‘সাসপেন্ড’ কেন্দ্রের, স্বাগত জানিয়ে পদ্মশ্রী ফেরত নিতে রাজি কুস্তিগীর বজরং

কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক আসন্ন জুনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার একদিন পরে, কেন্দ্রীয় সরকার নব-নির্বাচিত রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউএফআই) প্যানেলকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সমস্ত কাজ স্থগিত করার নির্দেশ দিল।
দিন তিনেক আগেই ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনে নির্বাচন হয়। বিভিন্ন পদে বহাল হন নতুন সদস্য। ফেডারেশনের নতুন সভাপতি হন সঞ্জয় সিং। তবে রবিবার সেই ফেডারেশনের নয়া কমিটিকেই সাসপেন্ড করল কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক। জানানো হয়েছে, ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন নিয়ম মানেনি। তাই সাসপেন্ড করা হচ্ছে। কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতির এই ‘তড়িঘড়ি’ প্রতিযোগিতা ঘোষণা ভালভাবে নেয়নি ক্রীড়া মন্ত্রক। নিয়ম অনুযায়ী, জাতীয় স্তরের কোনও প্রতিযোগিতা আয়োজন করার আগে এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক করতে হয়। সেখানেই প্রতিযোগিতা নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরই সূচি ঘোষণা করা হয়ে থাকে। যে কোনও প্রতিযোগিতার আগে প্রতিযোগীদের প্রস্তুতির জন্য সময় দিতে হয়।
দীর্ঘ টালবাহানার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরই আয়োজন করা হয়েছিল কুস্তি ফেডারেশনে নির্বাচন। গত বৃহস্পতিবার সেই নির্বাচন হয় এবং ফলপ্রকাশও হয়। সভাপতি পদে নির্বাচিত হন সঞ্জয় সিং। ফেডারেশনের বিদায়ী সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত তিনি। যা নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই ভারতীয় কুস্তিগিরদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরণ সিং। বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণের ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিং ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি হওয়ার পরে সাক্ষী কুস্তি ছেড়েছেন। দিল্লির ফুটপাথে পদ্মশ্রী পুরস্কার রেখে এসেছেন বজরং।
তবে নতুন কমিটি সাসপেন্ড করা নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নিজের ফেলে দেওয়া পদ্মশ্রী ফেরত নিতে চান বলে জানিয়েছেন অলিম্পিক্সে পদকজয়ী কুস্তিগির বজরং পুনিয়া। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পরে বজরং বলেন, ‘ক্রীড়া মন্ত্রক একেবারে ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। আমরা অভিযোগ করেছিলোম যে নতুন কমিটির উপর রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।’
অন্য দিকে, মুখ খুলেছেন ব্রিজভূষণ শরণ সিং ও সঞ্জয় সিং। ব্রিজভূষণ কুস্তির প্রাক্তন কর্তা। বজরংকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন ব্রিজভূষণ।  তিনি বলেন, ‘কারা ধর্নার নামে কুস্তির ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে সেটা সবাই দেখেছে। বার বার নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করে গিয়েছে কয়েক জন। সেই উদ্দেশ্যেই আমার নামে কুৎসা রটিয়েছে। সব সত্যি সামনে আসবে।’
মুখ খুলেছেন সদ্য নির্বাচিত কমিটির সভাপতি সঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘আমি বিমানে ছিলাম। তাই বিস্তারিত ভাবে কিছু জানি না। আমি এখনও কোনও চিঠিও পাইনি। প্রথমে দেখব যে সরকার ঠিক কী বলেছে, তার পরে আমাদের পদক্ষেপ করব।’
বজরংয়ের অভিযোগ, দেশের সমস্ত রাজ্যের কুস্তি ব্রিজভূষণের নির্দেশেই চলে। তাঁর কখায়, ‘আমাদের দাবি ভারতীয় কুস্তি সংস্থায় ব্রিজভূষণ ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের ঢুকতে দেওয়া যাবে না। সমস্ত রাজ্যে ওর লোক আছে। ওরাই সব চালায়। এতে দেশের কুস্তির ক্ষতি হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − five =