নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ‘দলের কাজ না করলে এবার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে দলের বুথ সভাপতিদের দায়িত্ব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুব্রত দত্ত। গতকাল পাত্রসায়েরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। তাঁর এই বক্তব্য সামনে আসতেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি।
গত বিধানসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় ভরাডুবি হয়েছিল তৃণমূলের। ৬টি আসনের মধ্যে ৫টি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটেও বিষ্ণুপুর আসনে জয়ের মুখ দেখেনি তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এই বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় নিজেদের সংগঠনকে মজবুত করে আগে থেকেই জনসংযোগে জোর দিতে চাইছে তৃণমূল। আর সেই লক্ষ্যেই এবার দলের পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জোরকদমে মাঠে নামার নির্দেশ বারেবারে দিয়েছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। এবার সেই জেলা নেতৃত্বের মুখে সরাসরি শোনা গেল হুঁশিয়ারির সুর। গতকাল পাত্রসায়েরে দলের বিজয়া সম্মেলন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুব্রত দত্ত স্পষ্টতই বলেন, ‘দলের পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্যরা যদি বিধানসভা নির্বাচন তাঁদের নয় মনে করে নিস্ক্রিয় থাকেন তাহলে, তাঁদের কলম কেড়ে নিতে বেশি সময় লাগবে না। ব্লক সভাপতি সে কাজ না করলে আমি জেলা সভাপতি হিসাবে সেই কাজ করব।’ এরপরই জেলা সভাপতির সংযোজন, ‘পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের কোনও সদস্য নিস্ক্রিয় থাকলে তাঁর সই করাও বন্ধ করে দেব। বদলে এলাকার দলীয় বুথ সভাপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাঁর সইয়ে পঞ্চায়েতের কাজ হবে।’ নিজের এই বক্তব্যের সমর্থনে জেলা সভাপতির যুক্তি, ‘দলনেত্রী মানুষের কাজ করার জন্য তাঁদের মনোনীত করেছিলেন, মানুষের কাজ করার জন্য দল তাঁদের জিতিয়ে সদস্য করেছে। তাই তাঁদের নিস্ক্রিয়তাকে দল কোনোভাবেই রেয়াত করবে না।’ এদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতির এমন হুঁশিয়ারি সামনে আসতেই রীতিমতো সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। সোনামুখীর বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য, ‘এরাজ্যে শাসক দল ও প্রশাসন এক হয়ে গেছে। এই বক্তব্য তারই প্রমাণ।’ বিধায়কের আরও কটাক্ষ, ‘২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে সোনামুখী বিধানসভা-সহ বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার প্রতিটি আসনে হার নিশ্চিত বুঝতে পেরে এখন তৃণমূলের জেলা সভাপতি এমন প্রলাপ বকছেন।’

