কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরের দিনেই একশো দিনের কাজে বাংলার বকেয়া মেটানোর দাবিতে বিধানসভা চত্বরে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে ধর্না দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাতে ছিল ১০০ দিনের বকেয়া মেটানোর দাবি লেখা প্ল্যাকার্ডও। তাতে লেখা ছিল, ১০০ দিনের কাজের টাকা অবিলম্বে দিতে হবে।’ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের সঙ্গেই ধর্নায় সামিল হয়েছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ শাসকদলের বিধায়করা। বুধবার বেলা তিনটেয় শুরু হয় ধর্না কর্মসূচি। চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নায় যোগ দেওয়ার কথা শুনে পাল্টা বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। তৃণমূলের ধর্না মঞ্চের উলটো দিকেই বিধানসভার গাড়ি বারান্দার সিঁড়িতে বসে ‘তৃণমূলের সবাই চোর’ বলে স্লোগান তোলেন বিজেপি বিধায়করা। কয়েক হাত দূরত্বের ব্যবধানে দু-পক্ষের স্লোগান পাল্টা স্লোগানে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে চোর চোর স্লোগান শোনা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখে। পালটা চোর স্লোগান শোনা যায় তৃণমূলের মুখে। ব্যাপক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় বিধানসভায়। লালবাজার থেকে হাজির হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে বিকেল পাঁচটা বাজার পরেই দিনের মত ধর্না তুলে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁর আগে স্পিকারের অনুমতি না নিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি করার জন্য একহাত নেন বিজেপিকে।
তিনি বলেন, ‘এটা নোংরামি, গুণ্ডামি। ওখানে সভা ফ্লপ হয়েছে। তাই এখানে এসে অসভ্যতা করছে। আমরা স্পিকারের অনুমতি নিয়ে ধর্না দিচ্ছি। ওদেরটা বেআইনি। বিধানসভায় অসভ্যতা করছে, স্পিকারকে বলবো সব ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিতে। আমাকে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ দেখিয়ে লাভ নেই। সারাজীবন লুঠ করেছে, গদ্দারদের আমাদের কেউ ভয় পায় না। কেউ কোনও কর্মসূচি নিলে আমরা কেউ বাধা দিই না। ভোটে পাত্তা পায়নি, গোহারা হেরেছে, তাই এসব করছে।’ জাতীয় সঙ্গীত দিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কর্মসূচি শেষ হয়। এর কিছুক্ষণ পর অবস্থান তুলে নেয় বিজেপি।
বিধানসভা চত্বরে ধর্না মঞ্চে যোগ দেওয়ার আগে সভার ভিতরেও বিজেপি সরকারের বঞ্চনা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের মোদি সরকারকে বিঁধে বলেন, ‘১০০ দিনের কাজ। আবাস যোজনা, রাস্তার কাজের টাকা দেয়নি। জিএসটির নামে কর তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাছের তেলে মাছ ভাজা হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলেই বিধানসভা চত্বরে আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে ধর্না কর্মসূচি শুরু করেছিল রাজ্যের শাসকদল। এদিন কালো পোশাক পরে বিক্ষোভ দেখান শাসক পক্ষের বিধায়করা। কালো পাড়ের শাড়ি পড়ে সেই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হন মুখ্যমন্ত্রী।