Early to bed and early to rise
makes a man
healthy, wealthy, and wise
আমরা ছোট থেকেই এই কবিতাটা পড়ে এসেছি।অর্থাত্ তাড়াতাড়ি বিছানা ছাড়, তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠ। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠাই মানুষকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল, সম্পদশালী ও জ্ঞানী তৈরি করতে পারে। তাড়াতাড়ি ঘুমানো, ভোরবেলা ঘুম থেকে ওঠা।জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এটা খুব জরুরি বিভিন্ন ভাবেই বোঝানো হয়েছে।কিন্তু ঘুম থেকে উঠতে গেলে আগে তো ঘুমানো জরুরি। কিন্তু সমস্যা তো এই ঘুমেই।
ঘুম।শরীর মন সুস্থ রাখতে যা অত্যন্ত জরুরি, তা নিয়েই বাড়ছে সমস্যা। লকডাউন, কোভিড, ওয়ার্ক ফ্রম হোম এসে যে সমস্যা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজার গুণ।
ইনসমনিয়া, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া তো ছিলই গত দুবছর ধরে কোভিডের জেরেও বাড়ছে অনিদ্রা। ঘুম কতটা জরুরি, ঘুমের সমস্যা সম্পর্কে জন সচেতনতায় প্রতি বছর ১৮ মার্চ পালিত হয় বিশ্ব ঘুম দিবস (world sleep day)। আজ, শুক্রবার বিশ্ব ঘুম দিবস। ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অফ স্লিপ মেডিসিন ২০০৮ সালে প্রথম ওয়ারর্ল্ড স্লিপ ডে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সমীক্ষা বলছে, বিশ্বের প্রতি ১০০ জন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের মধ্যে ৩৫-৪৫ জন ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। এই তালিকায় শুধু বয়স্করা নয়, তরুণ প্রজন্মও রয়েছে।কম ঘুম মানেই মাথা ধরা, ক্লান্তি, মেজাজ খারাপ। সমস্যা হতে পারে মানসিকও।বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইদানীং মোবাইল এসে কেড়ে নিয়েছে ঘুম। আর অনুঘটক হয়েছে কোভিড। কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন। সারা রাত দু চোখের পাতা এক হচ্ছে না। ক্লিনিকেও বাড়ছে ভিড়।
কেন এই সমস্যা?
বিশেষজ্ঞদের কথায় করোনা মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে বলে ঘুমের সমস্যা হয়। তাছাড়া লকডাউন, ওয়ার্ক ফ্রম হোমে সারাদিন বাড়িতে থাকা, রাত জেগে মোবাইলে ওয়েব সিরিজ দেখা, সোশ্যাল সাইটে চ্যাট করা ঘুমের যে চক্র তার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। ফলে অনেকেরই রাত তিনটে, চারটের আগে ঘুম আসছে না। ফল, কাজে অমনোযোগ, গা ম্যাজম্যাজ করা, এনার্জি কমে যাওয়া।
উপায় কি ওষুধ?
এ বিষয়ে বিখ্যাত এক সাইকিয়াট্রিস্টের বক্তব্য, ঘুম না এলেও ওষুধ খাবেন না।কারণ এতে ওষুধের ওপর নির্ভরতা তৈরি হবে।
নিজে থেকে ঘুম আসবে কীভাবে?
পরিবেশ-
রাতে শুতে যাওয়ার আগে ইষদুষ্ণ জলে স্নান করতে পারলে খুব ভাল হয়। যদি সেটা করতে না পারেন হাত-পা মুখ ধুয়ে, ঘাড়ে জল দিয়ে শুতে যান।শোওয়ার ঘর, বালিশ, বিছানাকে ঘুমের উপযোগী করতে হবে। ঘরে থাকবে হাল্কা আলো। এবার হাল্কা করে চালিয়ে দিন কোনও গান। বা বাঁশির সুর।
পোশাক- ঘুমানোর সময় সুতির খোলামেলা পোশাক খুব জরুরি। পোশাক যদি টাইট হয়, তাহলে ঘুম আসতে সমস্যা হবে। মোবাইল নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা যাবে না।
গল্প শুনুন- ঘুম একেবারে না আসতে চাইলে বরং গল্পের বই পড়তে পারেন। কিম্বা ঘর অন্ধকার করে কোনও অডিও স্টোরি শুনুন।
নির্দিষ্ট সময়- একটা সময়েই শুতে যেতে হবে ও উঠতে হবে।প্রথমে অসুবিধে হলেও, পরে অভ্যেস হয়ে যাবে।ঘুম না এলেও একই সময়ে শোওয়া ও ওঠা অভ্যেস করতে হবে।
এক্সারসাইজ, মর্নিং ওয়াক- নিয়মিত হাঁটাহাটি করুন সকালে। ব্যায়াম করুন। এতে শরীরে পরিশ্রম হবে। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন।