ফের যাদবপুরের ছায়া রায়গঞ্জে। এবারে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে হোস্টেলে দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের একাংশকে শারীরিক ও মানসিক নিগ্রহের অভিযোগ তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে কার্যত আতঙ্কিত নিগৃহীত পড়ুয়ারা। তাদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। যদিও তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন সিনিয়ররা। অন্যদিকে অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং কাণ্ড ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিং রুখতে নড়েচরে বসেছিল সরকার থেকে শুরু করে প্রশাসন। কিন্তু তারপরেও মাঝে মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে সিনিয়রদের দ্বারা জুনিয়রদের নিগ্রহের ঘটনা। এবারে এমনই অভিযোগ উঠল রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে। এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছাত্রীদের একাংশ সিনিয়রদের বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে সরব হন। গত রবিবার হোস্টেল ক্যাম্পাসে একটি বার্থ ডে পার্টি সেলিব্রেশন ঘিরে ঝামেলার সূত্রপাত হয়। নিগৃহীত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের অভিযোগ, তারা এক সহপাঠীর বার্থ ডে সেলিব্রেট করছিলেন। তখনই সিনিয়র অর্থাৎ তৃতীয় বর্ষের কিছু পড়ুয়া তাদের বকাঝকা করে। তখনকার মতো ঝামেলা মিটে গেলেও ঐ ইস্যুতেই গত শুক্রবার গভীর রাতে তাদের ডেকে পাঠান সিনিয়ররা। অভিযোগ এরপরই জুনিয়রদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করা হয়। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। মারধর পর্যন্ত করা হয় বলে অভিযোগ।কোমল মীনা নামের এক জুনিয়ার ছাত্র জানান, সিনিয়ররা তাকে বেধরক মারধর করে। তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন। পরে জল ঢেলে তাকে সুস্থ করে আবার নির্যাতন করা হয়। তাদের আবার মারধরের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। যার জেরে আতঙ্কিত রাজস্থানের বাসিন্দা এই মেডিক্যাল পড়ুয়া। নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছেন তিনি। ঘটনায় রীতিমতো ভেঙে পরেছেন ছাত্রীরাও।
রিয়া সিং নামের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী জানান, ঘটনার আতঙ্কে হোস্টেলে থাকতে পারছেন না। তাকে উদ্দেশ্য করে নানান কুমন্তব্য করা হচ্ছে। তিনি সুবিচার চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। জুনিয়রদের তোলা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ঋষভ মুখার্জি। পাল্টা অভিযোগকারী ছাত্র ছাত্রীদের বিরুদ্ধে কলেজে নেশা করা সহ কলেজের পঠন-পাঠনের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ এনেছেন তিনি। এ বিষয়ে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান ঋষভ।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডঃ বিদ্যুৎ বন্দোপাধ্যায় অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।