উত্তর ২৪ পরগনা: ফর্মে লেখা আছে ‘টু বি পাবলিস্ট’। কেন্দ্রীয় সরকার এখনও লিগালি গেজেট নোটিফিকেশন করেনি। তার আগেই বলা হচ্ছে সিএএ চালু হয়ে গেছে। বিজেপি ভাঁওতা দিচ্ছে। মিথ্যে কথা বলছে। ভোটের আগে বিগত দিনের মতো ঝুলি থেকে সিএএ এর বেড়াল বের করে মানুষকে ভয় দেখানো হচ্ছে। সিএএ চালু নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য বারাসাতের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের।
বুধবার বারাসাত পুরসভার কমপেক্ট স্টেশনের উদ্বোধন করতে এসে এমনই মন্তব্য করেন সাংসদ। যখন সিএএ লাগু হয়ে গেছে বলে বিজেপির পক্ষ থেকে উৎসব পালন করা হচ্ছে ঠিক তখনই সিএএ লাগুর আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন তৃণমূলের পোড় খাওয়া সাংসদ। তিনি বলেন, যে সব বিজেপি নেতা মন্ত্রীরা বলছেন সিএএ লাগু হয়ে গেছে তাদের একটু পড়াশুনা করা উচিত। কেন্দ্র সরকারের পক্ষথেকে যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তার প্রথমেই পরিষ্কার সব বলে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি নেতা মন্ত্রীদের উচিৎ সেটা পড়ে নেওয়া। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে মানুষেরা এদেশে ৪০ বছর ৫০ বছর ধরে বাস করছে, যাদের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, জমিজমা আছে তারা নতুন করে কেন নাগরিকত্বের প্রমাণ কেন দেবে? এটা একটা ছলনা। এটা দিয়ে যারা বর্তমানে নাগরিক সেটাও কেটে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমি যদি আজ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করি তা হলে পক্ষান্তরে স্বীকার করে নিলাম আমি নাগরিক নই। বিজেপি এটাই করার চেষ্টা করছে। এমনকী, ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে যে পোর্টাল থেকে সিএএ এর ফর্ম ফিলাপ করা হচ্ছে তার বৈধতা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তুলেদেন কাকলি। তিনি বলেন, যার এখনও নোটিফিকেশনই হয়নি তার জন্য ফর্ম ফিলাপ কি করে সম্ভব। ফলে সিএএ লাগু হওয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিলেন বারাসাতের সাংসদ।
মঙ্গলবার হাবড়ার মঞ্চ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় সিএএ লাগু হতে দেব না বলে জোরালো আওয়াজ তোনেন। তিনি বলেছেন কোন মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে যেতে দেব না। তার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য ও দিল্লির সংসদ কাপানো সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার সিএএ এর লাগুর বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। তিনি আরও বলেন, আইনটিতে বলা হয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এইরকম দেশে যারা সংখালঘুরা, তারা যদি অত্যাচারী হয়ে ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব দাবি করে তবে তাদেরকে দেওয়া হবে। তার সঙ্গে যারা ভারতবর্ষে ইতিমধ্যেই বসবাস করছে, পড়াশুনা করছে, চাকরি করছে, ব্যবসা করছে, জমিজমা আছে তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। যারা এই ফর্ম পূরণ করবেন তারা এটা স্বীকার করে নিলেন তারা এদেশের নাগরিক নয়। এটা একটা ভয়ঙ্কর ছলনা, বড়মাপের ছক। বিজেপি এই ছকে পা দেবেন না বলেই এদিন তিনি সাধারণ মানুষকে আবেদন করেন।