নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে দলের পতাকা কাঁধে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা সটান ঢুকে পড়লেন সিপিএমের কার্যালয়ে। সিপিএম কার্যালয়ে থাকা কর্মীদের কাছে তৃণমূলের পক্ষে ভোটদানের আবেদনও জানালেন। বাঁকুড়ার তালডাংরা ব্লকের বিবড়দা গ্রামের এমন ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই তোলপাড় রাজনৈতিক মহল। নিছকই সৌজন্যতা নাকি প্রচারে চমক দিতেই এমন উদ্যোগ? সিপিএম কর্মীরা বিষয়টিকে তেমন আমল না দিলেও বিজেপির খোঁচা, বিপন্নতা কাটাতে এখন সিপিএমের হাত ধরছে তৃণমূল।
একসময়ের বাম দুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল বাঁকুড়ার তালডাংরা। রাজ্যে পালাবদলের পরও বামেদের সেই দুর্গ অটুট ছিল ২০১৬ সাল পর্যন্ত। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তালডাংরা বিধানসভায় তৃণমূল জয় পেতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে সেই দুর্গ। রাজ্যে পালাবদলের পর বামেদেরও বারবার এই তালডাংরায় তৃণমূলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হতে দেখা গিয়েছে। সেই তালিডাংরাতেই এবার দেখা গেল অন্য ছবি।
তালডাংরার বর্তমান বিধায়ক তথা বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর হয়ে ভোট প্রচার করতে গিয়ে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ে সটান ঢুকে পড়লেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। ওই কার্যালয়ে বসে থাকা কর্মীদের কাছে তাঁরা তৃণমূলের পক্ষে ভোট দেওয়ার আবেদনও জানান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের তালডাংরা ব্লক সভাপতি তারাশঙ্কর রায়ের নেতৃত্বে এদিন বিবড়দা গ্রামে ভোট প্রচার চলছিল। সেই সময় বিবড়দা গ্রামে সিপিএমের কার্যালয় খোলা থাকায় সেখানে ঢুকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানান ব্লক সভাপতি সহ তৃণমূল কর্মীরা।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতির যুক্তি, উন্নয়নের নিরিখে তৃণমূলের জয় এখন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বামেরাও যদি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে হঠানোর লক্ষে তৃণমূলকে ভোট দেয় তা হলে জয়ের ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পাবে। আর সেই লক্ষ্যেই সিপিএমের ওই কার্যালয়ে গিয়ে ভোট ভিক্ষা করা হয়েছে। সিপিএম অবশ্য বিষয়টিকে তেমন আমল দিতে নারাজ। সিপিএমের দাবি, ‘এদিন তৃণমূলের মিছিলে লোক হয়নি। তাদের এমনই অবস্থা যে একসময় যারা সিপিএমকে আক্রমণ করেছিল, তারাই এখন সৌজন্যতা দেখাতে আমাদের কার্যালয়ে আসছে।’ বিজেপি অবশ্য এই বিষয়টিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপির দাবি, এই ঘটনা প্রমাণ করে সিপিএমের তৃণমূল বিরোধিতা আসলে নাটক। তৃণমূল এখন নিজে বাঁচার তাগিদে মুমূর্ষু সিপিএমেক বাঁচাতে চাইছে।