নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলার প্রাগৈতিহাসিক ভূখণ্ড শুশুনিয়া পাহাড়। আর এই পাহাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল শুশুনিয়ার বিখ্যাত পাথর শিল্প। যার কারুকার্য ছিল দেখার মতো, কিন্তু পাথর শিল্পের জন্য দরকারি কাঁচামাল বা পাথর আসত খোদ শুশুনিয়া পাহাড় থেকে। পাহাড় কেটে নামানো হত পাথর, তখনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ার। তারপরই ছাতনা বন দপ্তরের তৎপরতায় শুরু হয় পাহাড় বাঁচাবার অভিযান। বেআইনি ভাবে পাথর কেটে নামানো বন্ধের জন্য যা যা করণীয় ছিল সেই সব পন্থা অবলম্বন করা শুরু হয়। বর্তমানে পাথর নামানো প্রায় বন্ধ।
অত্যন্ত প্রাচীন ভূখণ্ড শুশুনিয়াতে গবেষণা করতে আসেন গবেষকরা। তার সঙ্গে এলাকার সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। দীর্ঘ দিন ধরে পাহাড়ের একটি ন্যাড়া অংশে পাথর কাটা হলে বিকৃত হতে পারত পাহাড়ের গঠন। তাছাড়া পাহাড়ের এক অংশে রয়েছে রাজা চন্দ্রবর্মার বহু প্রাচীন শিলালিপি অর্থাৎ পাহাড়ের ঐতিহ্য এবং ইতিহাসকে রক্ষা করতেই একপ্রকার তৎপর হয়ে পাহাড়ে আগুন জ্বালানো, পাথর কাটার বিরুদ্ধে কাজ করছে বন দপ্তর। সঙ্গে শুশুনিয়া পাহাড়ের বন্ধ্যা জমিতে ফেলা হচ্ছে বীজতলা, যাতে পাথরেও ফুল ফোটে।
সাম্প্রতিক ভারতীয় ডাক টিকিটে জায়গা করে নিয়েছে শুশুনিয়ার পাথর খোদাই শিল্প কিন্তু সেই শিল্প আজ প্রায় বন্ধের মুখে। বাইরে থেকে পাথর কিনে শিল্পীদের পক্ষে শিল্প বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বন দপ্তরের তৎপরতায় এবং সরকারের সহায়তায় শুশুনিয়া পাহাড়ের রোগ উপশম হলেও হারিয়ে গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী পাথর শিল্প, শিল্পীরা বেছে নিয়েছেন অন্য ব্যবসা। কী ভাবে পাহাড়ের ক্ষতি না করে বজায় রাখা যায় এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প তা নিয়ে থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন।