নিজস্ব প্রতিবেদন, কালনা: রবিবার রাত আটটা নাগাদ পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা নতুন বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি জঙ্গল থেকে এক ব্যক্তির পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়রা দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সোমবার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মৃতের নাম দয়াল চন্দ্র মালিক। তাঁর বাড়ি কালনা পুরসভার কাসারিপাড়ায়। তিনি পেশায় শিক্ষক ছিলেন। তিনি গত ৭ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। শিক্ষকের পরিবার থেকে কালনা থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শেয়ার বাজারে টাকা লাগিয়ে বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন দয়াল চন্দ্র মালিক নামের পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের পারুলডাঙা নসরতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক। শেয়ার বাজারে টাকা লাগিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে এলাকায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ার ফলে অকালে প্রাণ গেল ওই শিক্ষকের। মৃত শিক্ষকের স্ত্রী সোমা মাইতি মালিক জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী বাজারে প্রচুর ঋণ নিয়ে ফেলেছিলেন। পাওনাদাররা তাঁর বাড়িতে মাঝেমধ্যেই আসতেন টাকা চাইতে। পাওনাদাররা বাড়িতে এসে যাচ্ছেতাই ভাবে প্রতিদিন অপমান করতেন। সেই অপমানের হাত থেকে বাঁচতেই গত ৭ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তারপরে রবিবার রাত আটটা নাগাদ স্বামীর পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পাওনাদারদের মানসিক অত্যাচারেই আমার স্বামীর প্রাণ চলে গেল।
ওই শিক্ষকের এক সঙ্গী নৌসার আলি মণ্ডল জানিয়েছেন, উনি শেয়ার বাজারের টাকা লাগিয়ে প্রচুর ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। আগেও একবার আত্মহত্যা করতে গিয়ে পরিবারের কথা ভেবে তিনি ফিরে এসেছিলেন কিন্তু এবার তিনি আর ফিরলেন না। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তার সঠিক কারণ জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ঋণের দায়ে একজন শিক্ষক বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে ঘর ছাড়া হওয়ার পর এবার ঋণের দায়ে প্রাণ গেল আর এক শিক্ষকের।