জলপাইগুড়িতে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া বাড়ি নতুন করে গড়ে দেওয়ার টাকা দিতে চায় রাজ্য সরকার। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তার অনুমতি দিচ্ছে না। বুধবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে রাজভবন থেকে বেরিয়ে এমনটাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরেই কমিশনের তরফে রাজ্য সরকারকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, জলপাইগুড়িতে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার টাকা দেওয়ার অনুমতি সরকারকে দেওয়া হবে না। এ প্রসঙ্গে অসমের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বাংলার প্রতি আরও এক বার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ এনেছেন তিনি। জানিয়েছেন, আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীনই অসমে বিহু উৎসব পালনের জন্য টাকা দেওয়ার অনুমতি কমিশন দিয়েছে।
তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ আরও দাবি করেন, প্রতিশ্রুতি মতোই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে ফোন করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। অভিষেকের অভিযোগ, ‘বাংলার রাজ্যপাল বলেই হয়তো ফোন ধরেননি কমিশনার। বাংলার দাবিদাওয়া তুলতে পারেন ভেবেই ফোন ধরেননি।’
অভিষেক বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, দুপুরে কমিশনের তরফে রাজ্যকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নতুন বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। অর্থাৎ, যাঁদের ঘর মাটিতে মিশে গিয়েছে, তাঁদের বাড়ি তৈরির টাকা রাজ্য দিতে চাইলেও কমিশন অনুমতি দেবে না। রাজ্যকে বলা হয়েছে, ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া যাবে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামতির জন্য টাকা দেওয়া যাবে। অল্প ক্ষতি হলে পাঁচ হাজার টাকা এবং বেশি ক্ষতি হলে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়া যাবে না। আমার প্রশ্ন, এরা বাংলা বিরোধী নয় তো কারা বিরোধী?’
এর পরই অসমের প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক। একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদন দেখিয়ে বলেন, ‘অসমে বিহু পালনের জন্য সম্প্রতি ২০০০টি কমিটিকে কমিশন ২০০০ টাকা করে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন উৎসব পালনের জন্য এই টাকা দেওয়া হল। উৎসব নিয়ে আমার সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলার যখন প্রয়োজন, তখন কমিশন অনুমতি দিল না। কারণ বাংলায় বিজেপি সরকার নেই। অসমে রয়েছে। এর থেকেই প্রমাণিত, বিজেপি বাংলাবিরোধী।’
অন্যদিকে অভিষেক জানান, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে তাঁদের দাবির সঙ্গে রাজ্যপাল একমত হয়েছেন। তিনি সেই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথাও বলতে চান। কিন্তু মুখ্য নির্বাচন কমিশনার তাঁর ফোন ধরেননি। বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ এবং নিজেদের দাবি নিয়ে আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারে বলেও অভিষেক জানান।