তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিল হাইকোর্ট। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। প্রসঙ্গত, এতদিন রাজ্য পুলিশ এই মামলার তদন্ত চালাচ্ছিল। তবে এবার আর রাজ্য পুলিশের হাতে রাখা হচ্ছে না তাপস সাহার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার এই তদন্ত। মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থার বেঞ্চের সুস্পষ্ট নির্দেশ, এই মামলার যাবতীয় নথি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকদের।
এরই পাশাপাশি আদালত এদিন এও জানায়, নিয়োগ দুর্নীতির অন্যান্য মামলাগুলি বর্তমানে সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চার্জশিট জমা করেছে। এক্ষেত্রে তাপস সাহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের মামলার তদন্ত যদি রাজ্য সরকারের অ্যান্টি করাপশন ব্র্যাঞ্চ চালায়, তাহলে নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
পাশাপাশি এতদিন রাজ্য সরকারের যে তদন্তকারী অফিসার এই মামলার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁর ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাকে। আদালত জানায়, যেভাবে আইও এই মামলার তদন্ত করছেন, তাতে কোথাও গিয়ে অনেকটা বেশি দেরি হয়ে গিয়েছে। এই দেরি কারও নজর এড়ায়নি বলেই মনে করছে আদালত। এই প্রসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই মামলার তদন্তে তদন্তকারী অফিসারের হাত-পা বাঁধা ছিল কি না তা নিয়েও।
আর এই প্রসঙ্গেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, ‘তদন্ত যাঁর বিরুদ্ধে হচ্ছে তিনি যদি রাজ্যের প্রভাবশালী কেউ হন, তাহলে তদন্ত ট্রান্সফার করা যায়। আইও ইতিমধ্যেই অত্যন্ত দেরি করে ফেলেছেন। তদন্ত যে শুধু প্রয়োজন তাই নয়, স্বচ্ছভাবে তদন্তের প্রয়োজন আছে। জনমানসে যার প্রভাব পড়ে। মানুষের বিশ্বাস রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার ওপরেও থাকতে পারে। কিন্তু একই ধরণের মামলা দুটি তদন্তকারী সংস্থাকে দিলে জটিলতা বাড়বে। বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। কয়েকজন প্রভাবশালীদের ইতিমধ্যেই সিবিআই-এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি অভিযুক্তদের বয়ান মূল অভিযুক্তের ভূমিকা নিয়ে আদালত সন্দেহ মুক্ত হতে পারে না। কোথাও গিয়ে তদন্তকারীর হাত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পর তাপস সাহা জানান, আইনজীবীদের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করবেন এবং উচ্চতর আদালতেও যাবেন। সঙ্গে এও বলেন, ‘আমি ডিভিশন বেঞ্চে যাব।’ একইসঙ্গে এই অভিযোগের পিছনে বিজেপির এবং দলের একাংশের ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। তবে এই ধরনের অভিযোগের এক শতাংশও সত্যতা নেই বলেই দাবি বিধায়ক তাপস সাহার।