পটাশপুর: সরস্বতী পুজোর দিনে বাড়ির লক্ষ্মীর মাথা থেকে ধড় আলাদা করে দিল স্বামী। এখানেই থেমে থাকেননি কীর্তিমান স্বামী। এরপর এক হাতে কাটারি অন্য হাতে স্ত্রীর কাটা মুন্ডু নিয়ে গোটা এলাকা ঘুরে বেরাল স্বামী গৌতম। গোটা দেহে কোথাও লেগে চাপ চাপ রক্ত, কোথাও আবার রক্তের ছিটে। চোখ যেন জ্বলছে। রণংহেদি মূর্তিতে এই অবস্থাতেই গোটা গ্রামে ঘুরলেন যুবক। মুখে একটাই কথা, ‘তুমি আমায় ভুল বুঝো না। আমি তোমায় মুক্তি দিলাম।’ যা দেখে রীতিমতো ভিড়মি খাওয়ার জোগাড় গোটা গ্রামের। পুলিশ এসেও সহজে বাগে আনতে পারল না ওই যুবককে। তখনও কাটারি হাতে ফুঁসছে সে। তার কন্ঠে তখন দেশ-কাল-রাজনীতি নিয়ে লম্বা চওড়া ভাষণ। পাশের বেঞ্চে রাখা কাটা মুন্ডুটা।
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের পূর্ব চিস্তিপুর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চিস্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা গৌতম গুচ্ছাইত পেশায় খাবার ফেরিওয়ালা। বুধবার দুপুরে ফেরি করার জন্য খাবার তৈরি করেছিলেন তার স্ত্রী। সেই সময়ই স্বামী ভোজালি নিয়ে কোপ দেয় স্ত্রীর গলায়। ধড় থেকে থাকা আলাদা হয়ে যায় মাথা। এরপর স্ত্রীর কাটা মুন্ডু নিয়ে গোটা গ্রাম ঘুরে চিস্তিপুর বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছয় অভিযুক্ত স্বামী। খবর চাউর হতেই আশপাশের এলাকা থেকেও বহু মানুষ ওই যুবকের কাণ্ডকারখানা দেখতে ছুটে আসেন। তবে হাতে কাটারি, রক্তে ভাসা যুবকের তপ্ত মূর্তি দেখে কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাননি। শেষে পটাশপুর থানার পুলিশ গিয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় কাটা মুন্ডু। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য চলছিল। কার্যত বিবাদ চলছিলই বলা যায়। অনেকের ধারণা তৃতীয় ব্যক্তি ঘটিত কারণেই নাকি এই সমস্যার সূত্রপাত। স্ত্রী পরকীয়া করছে এমনটাই আঁচ করেছিলেন স্বামী। আর তার জেরেই ভয়ঙ্কর কাণ্ড।
পুলিশ সূত্রে খবর, অশান্তির মধ্যেই স্ত্রীকে মারধর করতে শুরু করে গৌতম। লোহার রড দিয়ে সজোরে আঘাত করলে অজ্ঞান হয়ে যায় স্ত্রী। তখনই তাঁর মাথা থেকে ধড় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলাদা করে দেয় গৌতম। ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে উঠেছে গোটা এলাকা।