গত দু’মাসে মেয়ে বদলে যাচ্ছিল। প্রাণ চঞ্চল ভাব হারিয়ে ক্রমশই চুপচাপ হয়ে পড়েছিল। বন্ধুদের সঙ্গে কথাও কমছিল। মেয়ে যে হতাশায় ভুগছে সেটা অনুমান করতে পারছিলেন বাবা-মা। তবে যতটা গুরুত্ব দেওয়ার দরকার ছিল, ততটা হয়তো দেননি।
সেই ভুলই বোধহয় কেড়ে নিল স্কুলছাত্রীর প্রাণ! মানিকতলার বাড়ি থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হল। রবিবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে ফুলবাগান থানা এলাকার মানিকতলা মেন রোডে। তদন্তে নেমেছে মানিকতলা থানার পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধে নাগাদ বাড়িতেই ছিল ইন্দ্রাণী মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে সাড়াশধ না পেয়ে তার কাকা খোঁজ করেন। ছাত্রীর ঘরে গিয়ে তিনি দেখেন, গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ছাদের সিলিংয়ে কাঠের বিম থেকে ঝুলছে তার দেহ । তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কাছের হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরিবার সূত্রে খবর, মাস দুই ধরে নবম শ্রেণির ছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। বন্ধুদের সঙ্গেও তেমন কথাবার্তা বলত না। তা নিয়ে মা-বাবা বার বার জিজ্ঞাসা করলেও কোনও উত্তর পাননি। কিন্তু সেই হতাশা থেকে মেয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেবে, তা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পাচ্ছেন না তাঁরা। মেয়েকে এভাবে হারিয়ে শোকে পাথর দাস পরিবারের সকলে। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
শরীরের যেমন অসুখ হয়, মনেরও তেমন হয়। বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছেন মনো চিকিৎসক থেকে মনোবিদরা। বিশেষত কৈশোরে থাকা ছেলে-মেয়েদের জীবনে এমন নানা ঘটনা ঘটতে পারে যা হয়তো তারা বাড়িতে বলতে পারছে না। এই বয়সের ছেলেমেয়েদের মনের তল পেতে কিছু ßুñল কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থাও রাখে। কিন্তু কোথাও যেন বিষয়টা নিয়ে পরিবারের বুঝতে অসুবিধে হয়ে যায়। যার জেরে ঘটে যায় অঘটন। তাই হতাশাকে যে হাল্কাভাবে নেওয়া উচিত নয়, এই ঘটনাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।