মৃত সন্তান প্রসবের কারণ খুঁজতে ময়নাতদন্ত, বাংলায় প্রথম প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি

কলকাতা: অনেক সময় মাতৃ গর্ভেই মৃত্যু হয় শিশুর। মৃত অবস্থায় শিশুর প্রসব হলে চিকিত্সার পরিভাষায় তাকে বলা হয় ইন্ট্রা ইউটেরিয়ান ফিটাল ডেথ।কিন্তু এমন ঘটনা কেন হয়?  তার সমস্ত কারণ এখন স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। তবে এই গবেষণায় বিশেষ দিশা দেখাতে পারে মৃত শিশুর ময়নাতদন্ত, মনে করছেন চিকিত্সকরা। পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম  গর্ভাবস্থায় মৃত শিশুর ময়নাতদন্ত হতে চলেছে। যাকে বলা হচ্ছে প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি। বস্তুত বেনজির ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে কলকাতা।

সোমবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (R G Kar Medical College and Hospital Government hospital) ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোমনাথ দাস মৃত শিশুটির ময়নাতদন্ত করবেন। এই ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গণদর্পণ। এমন ময়নাতদন্তের জন্য আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।স্বাস্থ্য ভবন ও আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে খবর, পাঞ্জাবের রূপনগর থেকে দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুরে দিন কয়েক আগে আসেন সন্তানসম্ভবা রূপা বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী নভোনীত সিং। নিউ আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শনিবার সকালে ওই গর্ভবতী একটি মৃত পুত্রসন্তান প্রসব করেন। এই ঘটনার পর বিষয়টি নাটকীয় মোড় নেয়। ওই দম্পতি মৃত পুত্র সন্তানের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা জানতে চান গর্ভস্থ শিশু সুস্থ ছিল, কিন্তু মৃত অবস্থায় কেন প্রসব হল। এর পরেই এদিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ শিশুর দেহ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে তুলে দেওয়া হয়।বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোমনাথ দাসের কথায়, “হঠাৎ করে কেন বাচ্চা মায়ের গর্ভে মারা যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা জানা যায় না। বিষয়টি অস্পষ্ট। কিন্তু মৃত শিশুর প্যাথলজিক্যাল অটোপসি করলে বোঝা সম্ভব মৃত শিশুর কী সমস্যা ছিল। ক্রোমোজোমের সমস্যা হতে পারে।” সোমনাথবাবুর কথায়, “যদি কারণ জানা যায়, ভবিষ্যতে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করলে সমস্যা কমতে পারে।” পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মন্দিরা দাশগুপ্তর কথায়, “শিশু গর্ভে দিব্যি ভাল। ডাক্তারও স্বস্তিতে। কিন্তু জন্ম নিল মৃত সন্তান। এর কারণ জানা নেই। তবে প্যাথোলজিক্যাল অটোপসি করে পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে সাবধানতা নিলে আদতে লাভ।” তিনি এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 17 =