তৃণমূল কংগ্রেসের বাৎসরিক শহিদ দিবস কর্মসূচি এবার পঞ্চায়েত ভোটে হিংসায় মৃত দলীয় কর্মীদের স্মরণে ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস’ হিসাবে পালিত হবে। দলনেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী এই সমাবেশকে সর্বাত্মক ও সফল করার ডাক দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। দাবি করা হয়েছে, এবারের একুশে জুলাই-এর সমাবেশ প্রতিবারের ভিড়ের রেকর্ডকে ভেঙে দেবে। ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সমাবেশের মঞ্চ বাঁধার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৃহস্পতিবার বিকেলে সমাবেশস্থল ঘুরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন সায়নী ঘোষ, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের মতো দলের শীর্ষ নেতারা। গিটার বাজানোর চেষ্টাও করেন তিনি।
মঞ্চের যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও বলেন। এবং তারপর উপস্থিত যুব নেতাদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান তিনি।
এবারও ২১ জুলাইয়ের মূল মঞ্চ তিনভাগে ভাগ করা থাকবে। প্রথম ভাগে থাকবেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর দুটি ভাগে থাকবেন ঘাসফুল শিবিরের একাধিক নেতা নেত্রী এবং আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা। যেহেতু এবার রেকর্ড সংখ্যক লোক ভরানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে দলের তরফে সেকারণে ভিড় বিগত বছরগুলির তুলনায় আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে অনুষ্ঠান শুনতে এবং দেখতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য শ্যামবাজার, পার্ক স্ট্রিট, এসপ্ল্যানেড, চেতলা, টালিগঞ্জ, হাজরা-সহ একাধিক জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছে।
কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে শহর জুড়ে। পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল সমাবেশস্থলে নিরাপত্তা খতিয়ে দেখেন। তিনি জানিয়েছেন, একুশে জুলাইয়ের জন্য শহরে কলকাতা পুলিশের প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী মোতায়েন হয়েছে। হেভিওয়েট রাজনীতিকদের কথা মাথায় রেখে, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যান-চলাচলের ক্ষেত্রে এবং শহরের সাধারণ মানুষের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টির দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। আজকের সমাবেশ উপলক্ষে বিপুল জনসমাগম সামাল দিতে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার ৩১ জন পুলিশ আধিকারিককে পথে নামানো হচ্ছে। পাশাপাশি যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার ৮ জন অফিসার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার ৮০ জন অফিসার থাকবেন। বহুতল ভবনের ছাদ থেকেও নজরদারি চালাবে পুলিশ। ধর্মতলা এলাকার ২০টি ছাদ বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১৮টি অ্যাম্বুল্যান্স, ৪৮টি কিয়স্ক প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের ৪টি দল এবং কুইক রেসপন্স টিমের ৬টি দলকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।